আজ শুভ বিজয়া দশমী। প্রতিমা বিসর্জনের দিন। দেবীদুর্গাকে বিদায়ের মাধ্যমে শেষ হবে শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। লাল-পাড় সাদা শাড়ি পরে সিঁদূর খেলার আনন্দে মেতে ওঠার দিন বিজয়া দশমী। মিষ্টিমুখ করে শত্রুতা, বৈরতা ভুলে যাওয়ার দিন। অসত্যের ওপর সত্যের জয়ের ও ধর্মের হাতে অধর্মের পরাজয়ের দিন। দেবী দুর্গা অশুভের বিরুদ্ধে শুভ শক্তির বিজয়ের প্রতীক।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) সকালে শুরু হয়েছে দেবীদুর্গার বিজয়া দশমী পূজা। সকাল ৯টা ১১ মিনিটে দেবীদুর্গার বিজয়া দশমী বিহিত পূজার মাধ্যমে পালিত হবে দশমী। এরপর সিদুঁর খেলায় প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে পরিসমাপ্তি হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের।
এই দিনেই দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। তাই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝে এই দিন আবেগ ও মন খারাপ মিশ্রিত একটি অনুভূতি সৃষ্টি হয়। দেবীদুর্গাকে বিদায় জানানো হয়, আবারও ফিরে আসার জন্য়ে। অপেক্ষা থাকতে হবে আরও একটি বছর। দেবী দুর্গাকে বাঙালি হিন্দু সমাজ ‘ঘরের মেয়ে’ হিসেবেই বরণ করে নেয়। এবার দেবী দুর্গা দোলায় গমন করবেন।
হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবীর আবির্ভাব হয় আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশীতে। শুক্লা দশমীতে মহিষাসুর বধ করেছিলেন তিনি। তাই বিজয়া দশমী এই বিজয়কেই চিহ্নিত করেন।
অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে দুর্গার জয় কিংবা রাবণকে পরাস্ত করতে রামের বিজয়লাভের মধ্য দিয়েই দেশজুড়ে অঞ্চলভেদে পালিত হয় বিজয়া দশমী এবং দশেরা উৎসব।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) ছিল শুভ নবমী। দেশের বিভিন্ন মণ্ডপে ও মন্দিরে ঢাক-ঢোল, কাঁসর-ঘণ্টায়, ধূপ-আরতি ও দেবী-দুর্গার পূজা-অর্চনায় কেবলই ছিল মায়ের বিদায়ের সুর। দিনব্যাপী বিভিন্ন পূজামণ্ডপে সারাবিশ্বের কল্যাণ এবং করোনামুক্ত বিশ্ব কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
বিহিত পূজার মাধ্যমে মহানবমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
পুরাণ মতে, এই তিথিতে দেবী দুর্গার আশীর্বাদ নিয়ে লঙ্কার রাজা রাবণকে বধ করেছিলেন দশরথ পুত্র শ্রীরামচন্দ্র। ১০৮টি নীলপদ্ম দিয়ে দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন রামচন্দ্র। তাই মহানবমীতে ষোড়শ উপাচারের সঙ্গে ১০৮টি নীলপদ্মে পূজিত হয়েছেন দেবী দুর্গা। নবমী সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত হয়েছে সন্ধিপূজাও।
গত ১১ অক্টোবর সোমবার সকালে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় শারদীয় দুর্গোৎসব।