• ঢাকা
  • রবিবার, ১২ মে, ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ৩ জ্বিলকদ ১৪৪৫

রাশিয়ার সেনা সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিল ওয়াগনার বাহিনী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২৩, ১২:৩০ পিএম
রাশিয়ার সেনা সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিল ওয়াগনার বাহিনী

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ সশস্ত্র বিদ্রোহ করার চেষ্টা করছে এমন আশঙ্কায় মস্কোসহ অনেক শহরে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যেই দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্তভ-অন-ডনে সেনা সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে প্রিগোজিনের সেনারা।

শনিবার (২৪ জুন) মার্কিন সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকা এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন শনিবার ভোরে বলেছেন, তার বাহিনী দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্তভ-অন-ডনে রাশিয়ান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তারা শহরের সামরিক স্থাপনাগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনীর দক্ষিণাঞ্চলের সেনা সদর দপ্তরে বিচরণ করছে ওয়াগনার সেনারা। আর সেটির ভেতর অবস্থান করছেন ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন।

টেলিগ্রামে একটি ভিডিওতে প্রিগোঝিন বলেছেন, “আমরা (সেনা) সদর দপ্তরের ভিতরে আছি। একটি এরোড্রোমসহ রোস্তভের সামরিক স্থাপনাগুলো নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, তার সেনারা এই শহরটি অবরুদ্ধ করবে এবং রাজধানী মস্কোর দিকে এগিয়ে যাবে। যতক্ষণ না প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু এবং জেনারেল ভেলেরি গেরাসিমোভ তাদের সঙ্গে দেখা করতে না আসছেন।

তিনি বলেছেন, “আমরা এখানে এসেছি। আমরা চিফ অব জেনারেল স্টাফ এবং সোইগুর সঙ্গে দেখা করতে চাই। যতক্ষণ তারা না আসছে, আমরা এখানে থাকব, আমরা রোস্তোভ অবরুদ্ধ করব এবং মস্কোর দিকে এগিয়ে যাব।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত অপর এক ভিডিওতে দেখা যায়, ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন দু’জন জেনারেলের সঙ্গে বসে আছেন। যার মধ্যে একজন হলেন সেনাবাহিনীর লেফটেনেন্ট জেনারেল ভ্লাদিমির আলেক্সেসেভ। এই জেনারেল এর আগে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন; সেখানে তিনি প্রিগোজিনকে অস্ত্র ফেলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

এর আগে শনিবার, প্রিগোঝিন এবং তার যোদ্ধারা ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় প্রবেশ করে। এ সময় সীমান্ত রক্ষীদের থেকে কোনো প্রতিরোধের সম্মুখীন না হয়েই তারা রোস্তভ শহরে প্রবেশ করেছিল।

এমফোর হাইওয়ে লিপেতস্ক ও ভরোনেঝ অঞ্চলের সীমান্তে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন লিপেতস্কের গভর্ণর। এমফোর মস্কোর সঙ্গে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের সংযোগ ঘটায় এবং একই সঙ্গে রোস্তভ অঞ্চল ও এর প্রধান শহর রোস্তফ-অন-ডনেও যাবার রাস্তা এটি।

রোস্তভ শহরের গভর্নর নাগরিকদের ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। মস্কোর মেয়র জানিয়েছেন রাজধানীতে সন্ত্রাস-দমন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিতে।

শুক্রবার প্রিগোঝিন তার দলের সৈন্যদের উপর এক মারাত্মক মিসাইল হামলার অভিযোগ করেন রাশিয়ার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। প্রিগোঝিন এই অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাননি তবে যারা এই হামলা করেছে তাদের শাস্তি দেওয়ার শপথ নেন তিনি। তবে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, এই মিসাইল হামলার কথা অস্বীকার করে এবং প্রিগোঝিনকে সবরকম ‘অবৈধ কার্যক্রম’ বন্ধের আহবান জানায়।

এদিকে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস (এফএসবি) শুক্রবার প্রিগোঝিনের বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি তদন্ত শুরু করেছে। তাকে সশস্ত্র বিদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে।

রাশিয়ার প্রধান কৌঁসুলির মতে এই ধরনের অপরাধের শাস্তি ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক তাতিয়ানা স্ট্যানোভায়া দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, “প্রিগোঝিন এবং ওয়াগনারের অবসান আসন্ন। এখন একমাত্র সম্ভাবনা হল পরম বিলুপ্তি। সংঘাত সম্পূর্ণ নিরর্থক বলে মনে হচ্ছে।”

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!