• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে যুক্ত করে ‘বৃহত্তর নেপাল’ মানচিত্র স্থাপন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১০, ২০২৩, ০৪:১১ পিএম
বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকে যুক্ত করে ‘বৃহত্তর নেপাল’ মানচিত্র স্থাপন

ভারতের নতুন সংসদ ভবনে স্থাপিত ‘অখণ্ড ভারত’ মানচিত্রের পাল্টা হিসেবে বৃহত্তর নেপালের একটি মানচিত্র স্থাপন করেছেন কাঠমান্ডু সিটির মেয়র বালেন্দ্র শাহ। এতে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলকেও যুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিহার, ঝড়খান্ড ও উত্তর প্রদেশসহ প্রতিবেশী ভুটানকেও মানচিত্রে যুক্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার (৯ জুন) নেপালের সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। বর্তমানে ভারতের বেঙ্গালুরু শহরে রয়েছেন সিটি মেয়র বালেন্দ্র শাহ। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার তার সহযোগীদের দিয়ে ভারতের নতুন সংসদ ভবনের দেয়ালে আঁকা একটি ম্যুরালের প্রতিক্রিয়ায় তার চেম্বারে ‘বৃহত্তর নেপাল’-এর মানচিত্র স্থাপন করেন।

দেশটিতে এই মানচিত্র স্থাপন নিয়ে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তার এই সিদ্ধান্তকে অসাংবিধানিক বলে মনে করছেন নেপালের কিছু সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তারা বলছেন, মেয়র শাহ কাঠমান্ডুর ভোটারদের দ্বারা নির্বাচিত হয়েছেন এবং যিনি নেপালের সংবিধান অনুযায়ী অফিস ও গোপনীয়তার শপথ নিয়েছেন, তিনি একই সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ। কিন্তু তার সর্বশেষ সিদ্ধান্তে সাংবিধানিক ও আইনি প্রশ্ন উঠেছে। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি কি সংবিধানের অক্ষর ও চেতনার বিরুদ্ধে যেতে পারেন?

নেপালের প্রখ্যাত মানচিত্রকার বুদ্ধি নারায়ণ শ্রেষ্ঠও নতুন এই মানচিত্রের নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, “শাহ নেপালের রাজধানীর একজন নির্বাচিত মেয়র। প্রটোকলে তার অবস্থান একজন প্রতিমন্ত্রীর সমান। তার এই বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। তার এমন কিছু করা উচিত নয় যার ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।”

মেয়রের এক সহযোগী বলেন, আমাদের নেপালের গর্বিত ইতিহাস মনে রাখতে হবে। মেয়র শাহ মনে করেন এটি জাতীয়তাবাদের জন্য একটি ইতিবাচক চেতনা সৃষ্টি করবে।

দেশটির সংবিধান বিশেষজ্ঞ বিপিন অধিকারি জানান, প্রাচীনকালে, নেপালি ভূখণ্ড পূর্বে তিস্তা থেকে পশ্চিমে সুতলজ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এসব এলাকা এখন ভারতীয় ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে পড়েছে। যারা বৃহত্তর নেপালের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা নেপালি রাজ্য এবং ব্রিটিশ-ভারতের মধ্যে অ্যাংলো-নেপালি যুদ্ধের পরে ১৮১৬ সালে স্বাক্ষরিত সুগৌলি চুক্তির আগে নেপালের নিয়ন্ত্রণে থাকা জমি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন।

সুগৌলি চুক্তির পর, নেপাল মেচি নদী থেকে পূর্বে সিকিম-জলপাইগুড়ি-তিস্তা এবং মহাকালী নদী থেকে পশ্চিমে সুতলজ পর্যন্ত ভূমি হস্তান্তর করে। ৪ মার্চ, ১৮১৬-এ নেপাল এবং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মধ্যে সুগৌলি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যা নেপালের ভূখণ্ডকে মেচি-মহাকালীতে সীমাবদ্ধ করে। সুগৌলি চুক্তির সময় নেপালের মোট ভূমির পরিমাণ ছিল আজকের নেপালের ৬০ শতাংশেরও বেশি।

তিনি বলেন, “একা ভূমি একটি দেশ গঠন করে না, জনসংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ। একজন দায়িত্বশীল নির্বাচিত প্রতিনিধি যখন এমন সিদ্ধান্ত নেন, তখন এটি এমন একটি বিষয় যা খুব সাবধানতার সঙ্গে দেখা দরকার।”

Link copied!