বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কয়েক মিলিয়ন ডলারের প্রতারণার দায়ে এক তুর্কি ক্রিপ্টোকারেন্সি বস ও তার দুই ভাইবোনের প্রত্যেককে ১১ হাজার ১৯৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফারুক ফাতিহ ওজার (২৯) নামক তুর্কি ক্রিপ্টোকারেন্সি বস তার থডেক্স এক্সচেঞ্জ ধসে পড়ার পর বিনিয়োগকারীদের সম্পদ নিয়ে ২০২১ সালে আলবেনিয়ায় পালিয়ে যান। জুনে তাকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হয় এবং অর্থ-পাচার, জালিয়াতি ও সংগঠিত অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, ওজার আদালতে দাবি করেন, তার অপরাধের উদ্দেশ্য থাকলে তিনি এত অপেশাদার আচরণ করতেন না।
তিনি আরও বলেন, “পৃথিবীর যেকোনো প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য আমি যথেষ্ঠ বুদ্ধিমান। তা এতেই প্রতিয়মান হয় যে আমি ২২ বছর বয়সে এটি প্রতিষ্ঠা করি।”
ইস্তাম্বুলে সংক্ষিপ্ত বিচারে তার বোন সেরাপ ও ভাই গুভেনকেও একই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
দেশটির সংবাদ সংস্থাগুলো জানিয়েছে, ২ হাজার ২৭ জন ভুক্তভোগীর করা একাধিক অভিযোগে আসামিদের পৃথকভাবে সাজা দেওয়া হয়। যার ফলে রায়ে তাদের প্রত্যেকের সাজার পরিমাণ দাঁড়ায় ১১ হাজার ১৯৬ বছর।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, প্রসিকিউটররা ওজারের ৪০ হাজার ৫৬২ বছরের সাজা দাবি করেছিল। ২০০৪ সালে তুরস্ক মৃত্যুদণ্ড রহিত করার পর থেকে এই ধরনের অস্বাভাবিক সময়সীমার কারাদণ্ড দেশটিতে সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় থডেক্স। ভার্চুয়াল মুদ্রার জন্য দেশের বৃহত্তম এক্সচেঞ্জগুলির মধ্যে অন্যতম হয়ে উঠেছিল এটি। স্বল্প সময়ে খ্যাতি অর্জন করা ওজারের সরকারপন্থী বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ফলে তার প্রতিষ্ঠা লাভ আরো সহজ হয়ে পড়ে।
২০২১ সালের এপ্রিলে তার প্ল্যাটফর্মটি হঠাৎ ধসে পড়ে। বিনিয়োগকারীরা তাদের সম্পদ হারান এবং ওজার আত্মগোপনে চলে যান। পরে ইন্টারপোলের আন্তর্জাতিক ওয়ারেন্টে গত বছর আলবেনিয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর তাকে ফেরত পাঠানো হয়।
দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছেল, ওজার ২ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সম্পদ নিয়ে পালিয়েছিলেন।
প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেন, থডেক্স বিনিয়োগকারীদের মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩৫৬ মিলিয়ন লিরা।