বাংলাদেশের দ্বাদশ নির্বাচন নিয়ে সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চাপ দেশে জঙ্গিবাদকে উস্কে দিতে পারে বলে এক নিবন্ধে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস। নিবন্ধে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের চাপের প্রভাবে বাংলাদেশে উগ্রবাদীরা শক্তিশালী হবে এবং পরিণতিতে উপমহাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের নিবন্ধে আরও বলা হয়, সম্প্রতি একাধিক বৈঠকে নয়াদিল্লি তার এই উদ্বেগের কথা যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে। নয়াদিল্লি আরও মনে করে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমাগত চাপের ফলে বাংলাদেশ চীনের দিকে আরও ঝুঁকে পড়বে।
ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক এটা যুক্তরাষ্ট্রের মতো তারাও চায়। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে যেভাবে চাপে রাখছে, তা দেশটির উগ্রবাদী ও মৌলবাদীদের উৎসাহিত করবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে ভারত তথা দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক নিরাপত্তার জন্য তা ইতিবাচক নয়। আর এই উগ্রবাদী শক্তিদের বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার বেশ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।
চলতি বছরের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে বাংলাদেশের যেসব নাগরিক সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বাধা দেবে তাদের ভিসা দেবে না দেশটি। এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের র্যাপিড একশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) ও বাহিনীটির কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
২০০৯ সাল থেকে টানা ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার লক্ষ্য চতুর্থ মেয়াদেও ক্ষমতায় আসা। তাকে দেখা হয় ভারতের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্রদের একজন হিসেবে। ভারত-বিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে দমন করার পাশাপাশি, তার সরকার ভারতের পণ্য পরিবহনের জন্য মূল বন্দরগুলিতে প্রবেশাধিকারসহ জ্বালানি ও বাণিজ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে সংযোগ বাড়িয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকারের ওপর দেশটির আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইউ) চাপের ফলে বিরোধী দল বিএনপি উৎসাহিত হচ্ছে। আর বিএনপির মিত্র ভারত বিদ্বেষী জামায়াতে ইসলামি পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ। সম্প্রতি দলটিকে গত ১০ বছরের মধ্যে প্রথম ঢাকাতে বড় মিছিল আয়োজন করতে দেখা যায়।
ভারত বিশ্বাস করে যে জামায়াতের শক্তিবৃদ্ধি চরমপন্থী শক্তিকে উৎসাহিত করতে পারে। ফলে বাংলাদেশের সীমান্তের সঙ্গে সংযুক্ত ভারতের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জন্য হুমকি সৃষ্টি হতে পারে।
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) আমন্ত্রণে চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারত সফর করে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল। সেখানে তারা একাধিক বৈঠকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাংলাদেশের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।







































