ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে গেছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন ছোটবোন শেখ রেহানাকে। সেই ৫ আগস্ট থেকেই তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লিতেই অবস্থান করছেন।
তবে সঙ্গে থাকা কূটনৈতিক লাল পাসপোর্ট বাতিল করেছে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তারপরও শেখ হাসিনা ৪৫ দিন বৈধভাবে ভারতে অবস্থান করেন। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে।
ফলে গত দুই সপ্তাহ ধরে শেখ হাসিনা ভারতে অবৈধভাবে অবস্থান করছেন বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্টও শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের স্ট্যাটাস নিয়ে জানতে চেয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তখন ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়, অল্প সময়ের মধ্যেই শেখ হাসিনা মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে চলে যাবেন।
সেই খবরের সূত্র ধরেই চলতি সপ্তাহে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে শেখ হাসিনা ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে কয়েকদিনে ব্যাপক আলোচনা চলছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানা বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা শেখ হাসিনার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) জানান, তার কাছে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, তার অবস্থান সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা দিল্লিতে খোঁজ করেছি, আমিরাতেও খোঁজ করেছি, কনফার্মেশন অফিসিয়ালি কেউ দিতে পারেনি।
এমন আলোচনা বিতর্কের মধ্যেই বিবিসি বাংলার এক খবরে জানা গেল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের ভাষ্য। তারা শেখ হাসিনাকে ভারতের সম্মানিত অতিথি হিসেবে উল্লেখ করে জানিয়েছেন, তিনি এখনও ভারতেই আছেন। তিনি কোথাও যাননি।
প্রতিবেদন মতে, ভারতের উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা এখনও ভারতেই অবস্থান করছেন। তার মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে চলে যাওয়ার খবরকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে অভিহিত করেছেন তারা। শেখ হাসিনা দিল্লিতে ঠিক কোথায় অবস্থান করছেন তা ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কখনই জানায়নি। তবে সেই ‘লোকেশন’ যে গত কয়েকদিনের ভেতরে পাল্টায়নি, সে কথাও জানানো হয়েছে।
খবরে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার গত ৪৮ ঘণ্টার গতিবিধি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা প্রত্যেকে নিশ্চিত করেছেন ‘শেখ হাসিনা এখানে গত সপ্তাহে যেভাবে ছিলেন, এই সপ্তাহেও ঠিক একইভাবেই আছেন।’
নয়াদিল্লির সাউথ ব্লকে উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা বলেছেন, “যে পরিস্থিতিতেই আসুন না কেন, শেখ হাসিনা এই মুহূর্তে ভারতের সম্মানিত অতিথি। তিনি যদি পরে তৃতীয় কোনো দেশে যানও, সেটা নিয়ে আমাদের লুকানোর কোনো কারণ নেই।” শেখ হাসিনা গোপনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো কোনো দেশে পাড়ি দিয়েছেন, এসব খবরকে উপেক্ষা করার পরামর্শও দিয়েছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা।
                
              
																
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    





































