সম্প্রতি বাংলাদেশের হাঁড়িভাঙা আম উপহার পেয়ে প্রশংসায় ভাসছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। এ ছাড়া নেপাল, মালদ্বীপ, ব্রুনাই থেকে শুরু করে পাকিস্তানেও শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে আম পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।
বিভিন্ন দেশে শুভেচ্ছাস্বরূপ ইলিশও উপহার দিয়ে থাকে বাংলাদেশ সরকার। যদিও এসব উপহারকে স্রেফ সৌজন্যতা বলতে নারাজ অনেক কূটনীতিক। এর পেছনে পররাষ্ট্রনীতিও ভূমিকা রাখে বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
উপহার হিসেবে ফল কিংবা মাছ পাঠানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ কূটনৈতিকভাবে কতটা লাভবান হচ্ছে, তা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে আলাপ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ।
ড. ইমতিয়াজ মনে করেন, এটি শুধু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারেই উৎসাহিত করে না, এসব উপহার সরকারের মানবিক দিকটিও প্রকাশ করে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের কাছ থেকে বিদেশি রাষ্ট্রের এ ধরনের উপহার পাওয়া ব্যতিক্রমী কিছু নয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেন, কূটনীতিকদের সঙ্গে মেলামেশা করেন, সে ক্ষেত্রে এ ধরনের সৌজন্যতা তাঁর ব্যক্তিত্বেরও পরিচয় বহন করে।”
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক রাজনীতির চেয়ে বাংলাদেশের অতিথিপরায়ণতাই এই প্রথার মূল উদ্দেশ্য বলে মন্তব্য করেন ইমতিয়াজ আহমেদ। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে এ ধরনের সম্পর্কে স্বার্থের চেয়ে আন্তরিকতাটাই প্রাধান্য পায়।
ইমতিয়াজ আহমেদের মতে, “পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন বিজেপিকে হারিয়ে নির্বাচনে জয়ের পর শেখ হাসিনা যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানিয়েছেন, শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে আম পাঠিয়েছেন, সেটাও কিন্তু দেখার মতো। এ ক্ষেত্রে আমি মনে করি, রাজনীতির চেয়ে আন্তরিকতাটাই মুখ্য। প্রধানমন্ত্রীর লেখালেখিতেও কিন্তু এ ধরনের সৌজন্যতাবোধ আমরা দেখতে পাই।”
আর তাই বিভিন্ন দেশে আম-ইলিশ উপহার দেওয়া কেবল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অবস্থানকেই তুলে ধরে না, অতিথিপরায়ণ জাতি হিসেবেও বাংলাদেশকে বিশ্ব মঞ্চে উপস্থাপন করে।