মাদক মামলায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে থাকা ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভক্ত। প্রায় তিন বছর আগে যাত্রা শুরু করা তার প্রোডাকশন হাউজের নাম রাখেন ‘সোনার তরী’।
২০১৮ সালের ৯ মার্চ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (এফডিসি) একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নিজের প্রোডাকশন হাউজের নাম ঘোষণা করেন পরীমনি। এর মাধ্যমে প্রযোজক হিসেবে বাংলা চলচ্চিত্রে নাম লেখান এই অভিনেত্রী। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে নাম ঘোষণা করার বেশ কয়েকমাস আগেই গোপনে নিজের প্রোডাকশন হাউজের ট্রেড লাইসেন্স তৈরি করেন এই নায়িকা।
আনুষ্ঠানিকভাবে ‘সোনার তরী’র যাত্রা শুরুর দিন নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে রবীন্দ্রভক্ত পরীমনি লেখেন, “এতকাল নদীকূলে/ যাহা লয়ে ছিনু ভুলে/ সকলি দিলাম তুলে/ থরে বিথরে... এখন আমারে লহ করুণা করে। ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই/ ছোটো সে তরী/ আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।… আজ এই সোনার তরী নামটা এখান থেকেই নেয়া আমার। আর কেন জানি না এখন মনে হচ্ছে কবিগুরুর এই লাইনগুলোর মতোই যেন এই তরীর যাত্রাটা। যদিও কবিতার নামটা ছাড়া কবিতার অর্থ ভেবে প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করিনি তখন।”
বাংলা চলচ্চিত্রে নতুন কিছু করার প্রত্যাশা প্রকাশ করে পরীমনি সেই স্ট্যাটাসে আরো লেখেন, “আমি এ তরী সত্যি সত্যি ভাসাতে চাই। তবে গড্ডালিকা স্রোতধারায় নয়, চেষ্টা করবো নতুন কিছু উপহার দিতে। কারণ একজন অভিনেত্রী হিসেবে দায়বদ্ধতা অবশ্যই রয়েছে। বলতে পারেন সেই দায়বদ্ধতা থেকেই ফিল্মপাড়ায় ভালো কিছু করার শপথ নিয়ে নামতে যাচ্ছি।”
পরীমনি আরো লেখেন, “গতানুগতিক প্রযোজনা হাউজের মতো হবে না আমাদের এ সোনার তরী। চেষ্টা করবো এ সোনার তরীতে করেই বাংলা সিনেমার সেই স্বর্ণযুগকে ফিরিয়ে আনার। বাকিটা হয়তো সময়ই বলে দেবে।” পাশাপাশি তিনজনের নাম উল্লেখ করে পরীমনি আরো লেখেন, “এভাবেই সোনার তরীর পালটা ধরে রেখ। এখনো অনেক পথ বাকি।”
রবীন্দ্রভক্ত পরীমনি বাংলা সিনেমায় স্বর্ণযুগ ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন ‘সোনার তরী’ প্রোডাকশন হাউজের মাধ্যমে। তিনি নিজেও ভক্তদের উপহার দিয়েছেন বেশকিছু ভালো সিনেমা। তবে পাল তোলেনি পরীমনির এই সোনার তরী। তার এই প্রোডাকশন হাউজ থেকে এখন পর্যন্ত মুক্তি পায়নি কোনো সিনেমা। ২০১৮ সালে ‘ক্ষত’ নামের চলচ্চিত্র শুটিং শুরুর কথা থাকলেও আজও তার শুরু হয়নি।
কিছুদিন আগে আবাসন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন পরীমনি। এই মামলায় কারাগারেও ছিলেন নাসির। যদিও পরবর্তীকালে জামিনে ছাড়া পান নাসির।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত বুধবার (৪ আগস্ট) বিকালে পরীমনির বনানীর বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব। অভিযানে পরীর বাসা থেকে এলএসডি, আইসসহ বিপুল পরিমাণ মদ জব্দ করা হয়। ওইদিনই রাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার নজরুল ইসলাম রাজের বাসায়ও অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব। এরপর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরদিন বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) পরীমনি ও রাজসহ তাদের দুই সহযোগীকে বনানী থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। তাদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মাদক মামলা দেওয়া হয়। সেই মামলায় ওইদিনই তাদের আদালতে তোলা হয় এবং পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাদের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।