শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ২০২০-২১ সেশনের স্নাতক প্রথম বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের নবীনবরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (২০ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটরিয়ামে এ নবীনবরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন সকাল সাড়ে নয়টায় ‘এ’ ইউনিটের এবং বেলা দুইটায় ‘বি’ ইউনিটের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সকাল সাড়ে নয়টায় ‘এ’ ইউনিটের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে আর্কিটেকচার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাত আরা দিলশাদ সঙ্গী ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক মো. সিয়ামুল বাশারের যৌথ সঞ্চালনায় এবং ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুশতাক আহমেদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার স্বাধীনতা রয়েছে। স্বাধীনতা মানে যা খুশি তাই করা না। কারো মনে যা চাইলো, তা করতে পারার নাম স্বাধীনতা না। সবাই স্বাধীনভাবে নিজের মতামত প্রকাশ করতে পারবে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পড়াশোনা শেষ করে দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে। এজন্য সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে। কোনোভাবেই সীমালঙ্ঘন করা যাবে না।”
উপাচার্য আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটি আবাসিক হলের মধ্যে মেয়েদের দুটি ও ছেলেদের দুটি হল রয়েছে। এর মধ্যে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী থাকে। আমরা মেয়েদের জন্য আরো একটি ও ছেলেদের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের সংস্কার করে আরো রুম বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করেছি। ছেলেদের হলের কাজ প্রায় শেষ। খুব তাড়াতাড়ি আমরা হলটি উদ্বোধন করতে পারবো। হলসমূহের কাজ শেষ হলে শতভাগ মেয়েরা এবং ৮০ শতাংশ ছেলেরা হলে থাকতে পারবে। বর্তমানে বাহিরে মেয়েদের জন্য তিনটি মেসের ব্যবস্থা আছে। এগুলোতে তারা থাকতে পারবে।”
ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “বিশ্বের জনপ্রিয় সেক্টর গুগল, ফেসবুক ও অ্যামাজনসহ বিভিন্ন জায়গায় কাজ করছে শাবিপ্রবির গ্রাজুয়েটরা। দেশ বিদেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখছে তারা। আগামী দিনে আরো ভালো মানের গ্রাজুয়েট তৈরি করতে কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।”
র্যাগিংয়ের বিষয়ে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “২০১৭ সালে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে আমি র্যাগিংয়ের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি প্রণয়ন করেছি। যদি কেউ র্যাগ দেয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম। আরো বক্তব্য রাখেন, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন, অ্যাপ্লাইড সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আরিফুল ইসলাম, ফিজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার, অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড মিনারেল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেদওয়ান, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. খায়রুল ইসলাম, লাইফ সায়েন্সেস অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. কামরুল ইসলাম, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক দিলারা রহমান, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আবু হেনা পহিল, রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন।
এদিকে বেলা দুইটায় একই জায়গায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘বি’ ইউনিট ও ব্যবস্থাপনা এব্ং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। এসময় নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাবেদ কায়সার ইবনে রহমান ও লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জোবাইদা গুলশান আরার যৌথ সঞ্চালনায় এবং ভর্তি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুশতাক আহমদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এছাড়া অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ২০২০-২১ সেশনের ভর্তি কমিটির সদস্য সচিব চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল হোসাইনী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক দিলারা রহমান, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. খায়রুল ইসলাম, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন, ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আবু হেনা পহিল, যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী প্রমুখ। এসময় ডিন ও পরিচালকবৃন্দ তাদের অধীনস্থ দপ্তর ও দপ্তর প্রধানেরা পরিচয় করিয়ে দেন।