শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে প্রতীকী অনশন শুরু করেছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
সোমবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়। ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’-এর ব্যানারে শিক্ষকরা এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে তাদের এই কর্মসূচি।
‘শিক্ষার্থীদের তাজা প্রাণের বিনিময়ে উপাচার্যের গদি রক্ষা নয়’ স্লোগানে অনশন শুরু করে শিক্ষকদের সংগঠন ‘বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক’। প্রতীকী এই অনশনে অংশ নিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, একই বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস।
আরও রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজলী শেহরীন ইসলাম, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোশাহিদা সুলতানা, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের কাজী মারুফুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসনীম সিরাজ মাহবুবসহ আরও অনেকে।
প্রতীকী অনশনে অংশ নেওয়া উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের কাজী মারুফুল ইসলাম বলেন, "আমাদের প্রাণপ্রিয় শিক্ষার্থীরা তাদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। দাবি না মেনে তাদের ওপর নির্যাতন করা হলো। অনশন করতে করতে ক্রমশ প্রাণ নিঃশেষ হওয়ার উপক্রম। অথচ তাদের ন্যায্য দাবির প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সরকার, রাষ্ট্রের কারো কোনো চিন্তা নেই।"
ঢাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী বলেন, "একজন উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীরা সন্তানের মতো। আমরা মনে করি, শিক্ষার্থীদের দাবি অন্যায় নয়। শিক্ষার্থীদের দাবি অন্যায় তাহলেও কোনো বাবা পুলিশ ডেকে সন্তানদের পিটাতে পারেন না। উপাচার্য এ পদে থাকার সব যোগ্যতা হারিয়েছেন। তাই শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে আমাদের আজকের এই কর্মসূচি।"
জাবির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, "একটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সবসময় প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে থাকে। যারা দেশের ন্যায়-অন্যায় নিয়ে ঘাটাঘাটি করে তারাই দেশের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত থাকে। আর এই চর্চা হয়ে থাকে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।"
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, "বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায়, যারা (উপাচার্য) সরকারের মনিবে পরিণত হতে পারে তারাই আজ ওই পদের জন্য যোগ্য হয়ে থাকে। উপাচার্য নিয়োগে কোনো মেধা বা যোগ্যতার যাচাই করা হয় না।"
এর আগে প্রগতিশীল ছাত্র জোটের পক্ষ থেকে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে ভিসি ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবি করেন এবং রাষ্ট্রপতি বরাবর খোলা চিঠি দেওয়ার কথা ব্যক্ত করেন।