সাংস্কৃতিক সংগঠনকে বলা হয় ক্যাম্পাসের প্রাণ। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক সংগঠন যত সুসংগঠিত সে ক্যাম্পাস তত প্রাণবন্ত। মানুষের জীবন মান বিকাশের জন্য সাংস্কৃতিক চর্চা অতীব জরুরী। সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে আমাদের মানসিক প্রবৃদ্ধি সাধিত হয়। সাংস্কৃতিক চর্চা আর বিকাশের লক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে উঠেছে প্রায় ১৭টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
এই সংগঠন গুলোর মধ্যে রয়েছে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আবৃত্তি সংসদ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রঙ্গভূমি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফার সোসাইটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মাইম সোসাইটি, বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি জবি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফিল্ম ক্লাব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাব ইত্যাদি।
তবে অর্থ সংকটে ধুকছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ১৮ বছর পার করলেও নিজস্ব কোনো সাংস্কৃতিক বলয় গড়ে ওঠেনি প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) সাংস্কৃতিক অঙ্গনগুলো সমৃদ্ধ করতে শিক্ষার্থীদের প্রয়াস থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
উল্টো গত কয়েক বছরে বাজেট হ্রাস পেয়েছে হুহু করে। ফলে সংগঠনগুলোর বার্ষিক কর্মপরিকল্পনা ও সদস্য অনুপাতে বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ কম হওয়ায় স্থবির হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সভাপতি তামজিদা বলেন, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে মুক্ত সাংস্কৃতিক চর্চা ও বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যকে ধারণ করে এগিয়ে চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল ধারার সাংস্কৃতিক চর্চার ক্ষেত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উল্লেখ্যযোগ্য নাম। সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বাঙালির সকল উৎসব উদযাপন করে আসছে। কিন্তু আমরা সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছি আমাদের পর্যাপ্ত বাজেট না থাকার কারণে।
তিনি বলেন, আমরা যে অনুষ্ঠান গুলো করে থাকি এর মধ্যে রয়েছে নবীন শিক্ষার্থীদের আগমনে নবীন আগমনী উৎসব নতুনের গান অমর একুশের স্মরণে একুশের আহবান, একুশের গান, স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতার বাংলাদেশ। বাঙালির অস্তিত্বে থাকা ঋতু গুলো বিভিন্ন উৎসব আয়োজনে বরণ করে নেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। তার মধ্যে প্রহেলা বৈশাখ উদযাপন, বর্ষা বরণ, শরৎ উৎসব, হেমন্ত উৎসব,হিম উৎসব, চৈত্রের গান, শোকের চিত্রায়ণ, নৃত্যের ঝুমুর, বাউল উৎসব, বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের মত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গুলোতে থাকে স্বকীয় অংশগ্রহণ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে সংগঠনটির রয়েছে ৩৭ সদস্যের একটি কার্যকরী কমিটি ও দুই শতাধিক সাধারণ সদস্য। যা নিয়ে আমাদের সংগঠনটি চলমান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, মূল ধারার পাঠ্যক্রমের সাথে সহশিক্ষা কার্যক্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সহশিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে সাংস্কৃতিক চর্চায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের তুলনামূলক আগ্রহ সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সাংস্কৃতিক চর্চার সাথে জড়িত সংগঠনগুলোর নানান খাতে ব্যয় বাড়ছে। কিন্তু আমরা গত কয়েক বছর ধরে দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয় সহশিক্ষা কার্যক্রমের সাথে জড়িত সংগঠনগুলোর বাজেট কমিয়ে আনছে। যা মুক্ত সাংস্কৃতিক চর্চা ও বিকাশে অন্তরায়। আমরা পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক সহযোগিতা পাই না। এতে করে যে কোনো প্রোগ্রাম করতে গেলে আমাদের অনেক বার ভাবতে হয়
এ নিয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদের সঙ্গে মুঠোফোনে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
 
                
              
 
																                   
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    



































