জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন আমবাগান এলাকা থেকে কাজী সামিতা আশকা নামের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমবাগান এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আশকা জাবির ইতিহাস বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলায়।
আশকার সহপাঠীরা জানান, আমবাগান এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম ব্যাচের জুনিয়রদের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতেন আশকা। তার সঙ্গে শাহরিয়ার জামান তুর্য নামের একজনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আত্মহত্যার বিষয়টি তুর্য মোবাইল ফোনে আশকার সহপাঠীদের জানান। তখন তারা ওই বাসায় গিয়ে দরজা ভেঙে আশকাকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। প্রেমিকের সঙ্গে ঝামেলার কারণে আশকা আত্মহত্যা করতে পারেন বলে জানিয়েছেন তারা।
আশকার রুমমেট মাইশা নুসরাত বলেন, “আমরা কেউ বাসায় ছিলাম না। আমি সন্ধ্যার আগে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আশকা আপুকে তুর্যের সঙ্গে ভিডিও কলে ঝগড়া করতে দেখি। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে তুর্য আশকা আপুর বান্ধবী সামিহাকে ফোন করে দ্রুত বাসায় যেতে বলেন। তখন তারা বাসায় গিয়ে আশকা আপুকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান।”
শাহরিয়ার জামান তুর্য বলেন, “আমি ও আশকা ভিডিও কলে কথা বলছিলাম। ছোট বিষয় নিয়ে আজকে ঝগড়া হয়। সেটা নিয়ে আশকা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তখন ফোন কেটে যায়। আমি বারবার চেষ্টা করেও তাকে পায়নি। তখন তার রুমমেট ও বন্ধুদের জানাই।”
ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হোসনে আরা বলেন, “শিক্ষার্থীরা ফোন দিয়ে জানায় আশকা অসুস্থ। তাই আমি দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দিতে বলি। পরে হাসপাতালে গিয়ে তার আত্মহত্যার বিষয়টি জানতে পারি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. রনি হোসাইন বলেন, “যত দূর শুনেছি, আশকা প্রায়ই তার বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়া করত। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে আত্মহত্যা করতে পারে। আমরা তার রুম পরিদর্শনে যাব। সেখানে গেলে বিস্তারিত জানাতে পারব।”
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. অর্ণব বলেন, “তাকে রাত সাড়ে নয়টায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ইসিজি রিপোর্ট দেখে বুঝেছি, অন্তত আধা ঘণ্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে। এটা যেহেতু অস্বাভাবিক মৃত্যু, পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর আমরা মৃতদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দেব।”
সাভার থানার উপপরিদর্শক আল মামুন কবির বলেন, “প্রাথমিকভাবে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে শনাক্ত করেছি। প্রেমিকের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে সে আত্মহত্যা করতে পারে বলে জেনেছি। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে পরিবারকে মৃতদেহ বুঝিয়ে দিতে পারব।”