• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীকে হেনস্তার অভিযোগ


জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২৩, ০১:৫৬ পিএম
জবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীকে হেনস্তার অভিযোগ
ছবি: প্রতিনিধি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। ওই কর্মকর্তা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের উপ-পরিচালক হিমাদ্রী শেখর মন্ডল। ভুক্তভোগী মাসুদা আক্তার একই দপ্তরের সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মাসুদা আক্তার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর বুধবার একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ভুক্তভোগী মাসুদা আক্তার পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরে গত বছর যোগদান করলেও চলতি বছরের ২ অক্টোবর পর্যন্ত দপ্তরে তার বসার কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। তিনি দপ্তরটির উপ-পরিচালক নায়লা ইয়াসমিনের অধীনে থাকায় তার গেস্ট চেয়ারে দীর্ঘ এক বছর যাবৎ বসে অফিস করেছেন। নায়লা ইয়াসমিন ২৬ অক্টোবর লিয়েন ছুটি নিয়ে কিশোরগঞ্জ-এর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রার পদে যোগদানের পূর্বে রেজিস্ট্রারের মৌখিক অনুমতি নিয়ে তার রুমে মাসুদা আক্তার ও সোনিয়া দিলশাদ সানোয়ারাকে বসার ব্যবস্থা করে দেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ৩০ অক্টোবর দুপুর ১টার দিকে ভুক্তভোগী তার চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় এই দপ্তরের উপ-পরিচালক হিমাদ্রী শেখর মন্ডল তার সাথে একই দপ্তরের সেকশন অফিসার কামরুজ্জামান রাসেলকে নিয়ে রুমে প্রবেশ করে। এরপরই তিনি ভুক্তভোগীকে জোর করে রুম দখল নিয়েছেন কি না জানতে চান। তারপর সে উত্তেজিত হয়ে আমার গায়ে হাত তুলতে উপক্রম হয় তখন দপ্তরের অন্য কলিগরা তাকে থামাতে চেষ্টা করেন।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, হিমাদ্রী শেখর মন্ডল ভুক্তভোগী মাসুদা আক্তারের সঙ্গে ফোনে কয়েকদিন অসৎ উদ্দেশ্যে অরুচিকর কথাবার্তা বলেন। একদিন ওই দপ্তরের উপ-পরিচালক সীমার সামনেই ভুক্তভোগীকে বিশ্রী ইঙ্গিত দিয়ে বলে আপা আপনি হিন্দু হলে আমি আপনাকে বিয়ে করতাম আপনাকে আমার খুবই ভালো লাগে।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মাসুদা আক্তার বলেন, এই অনাকাক্ষিত ঘটনার সময় আমি রুমে একা থাকায় অসম্ভব ভয় পেয়ে প্রক্টর স্যারকে তখনই অবহিত করি এবং প্রক্টর স্যার দুজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। আমি, নায়লা ম্যাডাম ও সোনিয়াসহ স্যারদের পুরো দপ্তর ঘুরে দেখাই এবং সম্পূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করি। একজন মহিলা কর্মজীবি হিসেবে আমার সম্মান ও নিরাপত্তার জন্য উপরোক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমি রেজিস্ট্রারের নিকট অভিযোগ দিয়েছি।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত হিমাদ্রী শেখর মন্ডল বলেন, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। বরং মাসুদা আক্তারই আমার সাথে বাজে আচরণ করেছেন।

মোবাইল ফোনে অসৎ উদ্দেশ্যে অরুচিকর কথাবার্তা বলার অভিযোগ কসম কেটে অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি এমন কিছু করিনি। তিনি আমার ধর্মের কেউ নন। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।

এবিষয়ে পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদ বলেন, আমার সাথে ছোট একটা বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে। কিন্তু তাকে দপ্তর থেকে বের হয়ে যেতে বলেছি, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। হিমাদ্রি শেখরের সাথে কথা-কাটাকাটি হয়েছে বলে পরে শুনেছি। এর থেকে বেশি কিছু আমি জানিনা।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ঘটনার দিন যখন বিষয়টি জানতে পারি তখন দুইজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠানো হয়েছে যেন লিমিট ক্রস না করে। পরবর্তীতে মাসুদা আক্তার নামের ওই কর্মকর্তা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এখন রেজিস্ট্রার, ট্রেজারার ও উপাচার্য স্যার ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিবেন।

এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Link copied!