রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে ফরম পূরণের নামে অযৌক্তিকভাবে ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মাঝে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৮ আগস্ট ২০২২ তারিখে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের এক সভায় ৪ নম্বর প্রস্তাবের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাস্টার্স ও অনার্স-এর সকল বর্ষের ফরম পূরণ ও ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার জন্য ৫০ টাকা ফি আদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীর একাডেমিক পরীক্ষাগুলোতে ফরম পূরণের ক্ষেত্রে আবাসিক হলগুলোর তেমন কোনো কার্যক্রম থাকে না। একজন আবাসিক কিংবা অনাবাসিক শিক্ষার্থীর পরীক্ষার আবেদনপত্রে সংশ্লিষ্ট হল প্রভোস্ট কেবল একটি স্বাক্ষর করে আবেদনের সত্যতা যাচাই করেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ফরম পূরণে হল প্রভোস্টের একটা স্বাক্ষর ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। শুধু এই একটি স্বাক্ষরের জন্য আলাদা করে ৫০ টাকা জমা দিতে হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সোহানুর রহমান সোহান বলেন, “থার্ড ইয়ারের ইমপ্রুভমেন্টের ফরম পূরণের জন্য প্রভোস্টের সাইন নিতে জিয়া হলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি একটি অ্যাকাউন্ট নম্বরে আলাদা করে ৫০ টাকা ব্যাংকে জমা দিতে হবে। আমি অফিসের ভাইদের কাছে কীসের টাকা দিতে হবে জানতে চাইলে তারা কোনো সদ্যুত্তর দিতে পারেননি। তারা বলছেন প্রভোস্ট যা করতে বলেছে, ‘আমরা তাই করেছি।’ পরে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে স্লিপ নিয়ে ফর্মে সাইন করার জন্যে দিয়ে আসলাম।”
এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, “আমার প্রশ্নটা হচ্ছে তারা যে টাকাটা নিচ্ছে, সেটা কেন নিচ্ছে সে বিষয়ে কেউ কোনো তথ্য দিতে পারল না কেন? প্রভোস্ট সাহেবরা বসেনই শুধুমাত্র সাইন করতে, কারণ সিট বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষমতা তো তাদের নেই। আমার আবাসিক কার্ড বাতিল করে অনাবাসিক করতে হয়েছিল হলে উঠতে পারিনি বলে। এখন সেই সাইন করার জন্যও নাকি টাকা দিতে হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের হয়রানি করার নতুন পন্থা আবিষ্কার করা হয়েছে। এই ৫০ টাকা দিতে আবার ব্যাংকে যাবেন, স্লিপ নিয়ে হলে আসবেন এবং তারপর বলবে পরেরদিন আসো।”
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. জয়ন্তী রানী বসাক বলেন, “প্রভোস্টের সিগনেচারের জন্য কোনো ফি আদায় করা হচ্ছে না, এটি ভুল তথ্য। প্রভোস্ট কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফরম পূরণের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫০ টাকা ফি আদায় করা হচ্ছে। এটা হল উন্নয়ন ফান্ড থেকে বিবিধ ফান্ডে জমা নেওয়া হবে। এরকম করেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সিগনেচারের জন্য প্রভোস্টের আলাদা কোনো ফান্ডও নেই, এককভাবে তিনি কোনো একাউন্টেও এই টাকাটা জমা রাখতে পারেন না।”