ঢাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের এক প্রশ্নপত্রেই ৬১ ভুল হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে বেশ আলোচনা চলছে।
কলেজটির একাদশ শ্রেণির আইসিটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এসব ভুল পাওয়া যায় বলে জানান পরীক্ষার্থীরা। রোববার অনুষ্ঠিত এ বিষয়ের বার্ষিক পরীক্ষার ‘বার্ষিক’ বানানটিও ভুল লেখা হয়েছে।
আইসিটি বিষয়ের ৫০ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নপত্রে প্রথম পৃষ্ঠায়ই বানান ভুলের সংখ্যা ২৫টি এবং দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় ১৫টি। এ ছাড়া বিরামচিহ্নের ভুল প্রয়োগ এবং শব্দের ভুল লিখন অর্থাৎ কখনো দুটি শব্দের মধ্যে অযাচিত সংযোজন এবং কখনো আবার যে শব্দ বা শব্দাংশ একসঙ্গে বসার কথা, এর মধ্যে ফাঁকা রেখে ভুল ঘটানোর সংখ্যা এবং কখনো শব্দের মাঝে আবার কখনো শব্দের শুরুতে হসন্ত প্রয়োগের মতো ভুলের সংখ্যা প্রথম পৃষ্ঠায় ১০টি এবং দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় ১১টি। প্রশ্নপত্রের ৩ নম্বর প্রশ্নে কলেজটির নাম দিয়ে একটি উদ্দীপক তৈরি করা হয়। উদ্দীপকেও ভুল করা হয়েছে কলেজের নাম।
ভুলের মধ্যে অল্পপ্রাণ ও মহাপ্রাণ বর্ণের ভুল চয়ন এবং ণত্ববিধান ও ষত্ববিধানের ভুল রয়েছে। অনেক বানানে ঋ-কারের জায়গায় ঊ-কারও দেখা যায়। এছাড়া কিছু কিছু শব্দে বিসর্গ চয়নের কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য ‘কৃত্রিম’ না লিখে ‘কূত্রিম’, ‘বুদ্ধিমত্তা’ না লিখে ‘বুদ্দিমত্তা্’, ‘বলা’ না লিখে ‘বল’, ‘জ্ঞান’ না লিখে ‘জআন’, ‘স্বপক্ষে’ না লিখে ‘সপক্ষে’ এবং ‘দ্বিতীয়’ না লিখে ‘দিত্বীয়’ লেখা হয়েছে।
প্রশ্নপত্রে এত ভুল নিয়ে পরীক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরীক্ষার্থী বলেন, “আমরা কলেজ থেকে শিখবো। আর কলেজের প্রশ্নপত্রেই যদি এভাবে এত ভুল দেখি, তবে তো দেখতে দেখতে একটা সময় আমরা ভুলটাকেই ঠিক মনে করবো আর সেটাই শিখে ফেলবো।”
এ ব্যাপারে সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ মোহসীন কবির বলেন, “এটি খুব সম্ভবত ভুল করে এমন হয়েছে, বাই মিসটেক হতে পারে। নতুন শিক্ষক এসেছে তো। আইসিটি যারা পড়ে তারা বাংলা বানানে একটু দুর্বল থাকে। এ বিষয়ে আমি পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে কথা বলবো। ঠিক কী কারণে এমনটি হয়েছে সেটি আমি দেখছি।”
পরবর্তী ব্যবস্থা কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি খুব দ্রুতই একশনে যাবো। এখানে কার খামখেয়ালি বা ভুল ছিলো তা খুঁজে বের করবো। পরে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”