• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

সাতক্ষীরায় গড়ে উঠেছে দুম্বার খামার


রিজাউল করিম, সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০২২, ১১:১৩ এএম
সাতক্ষীরায় গড়ে উঠেছে দুম্বার খামার

বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় শেষ জেলা সাতক্ষীরায় প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের প্রাণী দুম্বার খামার গড়ে সাফল্য পেয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম খোকা। 

ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম খোকা সাতক্ষীরা শহরের লস্করপাড়া এলাকার মৃত কাজী আব্দুল মোকিতের ছেলে। জেলা শহর থেকে সাত কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার আঁগড়দাড়ি ইউনিয়নের চুপড়িয়া গ্রামে তিনি এই দুম্বার খামারটি গড়ে তুলেছেন। 

এখন খামারটি বড় পরিসরে গড়ে তোলার স্বপ্ন তার। ভেড়া-ছাগলের মতোই এটি লালন-পালন করা যায়। এছাড়া গরু খামারের চেয়ে অধিক লাভবান হওয়ার আশায় গত সাত মাস আগে থেকেই তিনি দুম্বা পালন শুরু করেন। এদিকে, দুম্বা দেখার জন্য প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছেন তার খামারটিতে।

ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম খোকা জানান, ২০১০ সাল থেকে তিনি সেখানে ৫০ বিঘা জমির ওপর মৎস্য চাষ শুরু করেন। পাশাপাশি তিনি সেখানে গরুর খামারও তৈরি করেন। গরুর থেকে দুম্বায় বেশি লাভবান হওয়া যাবে ছেলের এমন পরামর্শে তিনি সেখানে দুম্বার খামার করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

একপর্যায়ে গত সাত মাস আগে তিনি পাবনার ঈশ্বরদী থেকে চার লাখ টাকায় দুটি দুম্বা কেনেন। তার থেকে একটি বাচ্চা হয়েছে। সেটির মূল্য এখন দেড় লাখ টাকা। এছাড়া দেড় মাস আগে ঢাকার জয়দেবপুর এলাকা থেকে তিন লাখ টাকা দিয়ে আরও দুটি দুম্বা নিয়ে এসেছেন। বর্তমানে তার খামারে পাঁচটি দুম্বা রয়েছে। খামারটি দেখভাল করার জন্য একজন শ্রমিকও নিয়োজিত আছেন। প্রত্যেক দুম্বার পেছনে দৈনিক ৬০ টাকা খরচ হয়। পাঁচটির পেছনে প্রতিদিন ৩০০ টাকা খরচ। স্বাভাবিক ছাগল-ভেড়া যেসব খাবার খায় দুম্বাও সেগুলোই খাচ্ছে। বাড়তি বা ভিন্ন কোনো খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। সহজেই লালন পালন করা যায়। রোগবালাইও নেই বলা যায়। গত সাত মাসে এখনো কোনো দুম্বা রোগাক্রান্ত হয়নি।

আব্দুস সালাম খোকা আরও জানান, একটি স্ত্রী দুম্বা ছয় মাস পর পর বাচ্চা দেয়। বছরে একটি স্ত্রী দুম্বা থেকে দুটি বাচ্চা পাওয়া যাবে। পাঁচ-ছয় মাস বয়সী একটি বাচ্চার মূল্য দেড় লাখ টাকা। তার পরিকল্পনা রয়েছে খামারটি বড় পরিসরে করার। সেই হিসেবে প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছেন তিনি। শখ করেই খামারটি করলেও এটি একটি লাভজনক ব্যবসা বলে তিনি জানান। খামারের পাঁচটি দুম্বার মূল্য বর্তমানে সাড়ে আট লাখ টাকা। 

খামারটি দেখভালের দায়িত্বে থাকা শ্রমিক আশরাফ আলী জানান, দিনে দুইবার খাবার দেওয়া হয়, সকাল ও বিকেলে। ঘাস, আমের পাতা, কলার পাতা, ভুসি এসব খায় দুম্বা। ছাগলের মতো লালন পালন করতে হয়। ঘর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়। তবে খুব তেজি প্রাণী এটি, এদের শক্তিও অনেক। ক্ষেপে গেলে তেড়ে আসে তখন সামলানো যায় না। এখন প্রতিদিন দুম্বা খামারটি দূরদূরান্ত থেকে দেখতে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। 

সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ বি এম আব্দুর রউফ জানান, এটা সৌদি আরবের প্রাণী। বিশেষ করে কুরবানির সময় পশুটির চাহিদা প্রচুর বেড়ে যায়। বাংলাদেশেও এটা সম্ভাবনাময় একটি প্রাণিসম্পদ। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার আবহাওয়ায় পশুটি পালন উপযোগী। এতে একদিকে যেমন আমিষের চাহিদা পূরণ করবে, অন্যদিকে আর্থিকভাবেও লাভবান করবে খামারিদের। এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে।

Link copied!