খুলনা নগরীর নতুন রাস্তার মোড়ে সড়ক অবরোধ করেছেন পাটকলশ্রমিকরা। উৎপাদন বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল চালু, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুটমিল, চট্টগ্রামের কেএফডি, আরআর এবং সিরাজগঞ্জের জাতীয় জুটমিলের শ্রমিকদের ২০১৫ সালের ১ জুলাইয়ের প্রাপ্য বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য পাওনা পরিশোধের দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত নতুন রাস্তা মোড়ে এ সড়ক অবরোধ করেন তারা।
খালিশপুর-দৌলতপুর জুটমিল কারখানা কমিটির ব্যানারে কারখানা কমিটির সভাপতি ও সিবিএ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির হোসেন মনির সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় এ কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকরা।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে মহামারি করোনার সময়ে ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে হাজার হাজার শ্রমিকসহ পাটসংশ্লিষ্ট তিন কোটির ঊর্ধ্বে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। কর্মহীন শ্রমিকরা অর্ধাহারে-অনাহারে থেকে অবর্ণনীয় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে অধিকাংশ শ্রমিক সম্পূর্ণ মজুরি না পেয়ে স্ত্রী-সন্তানদের মুখে খাবার দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবারের অসুস্থ সদস্যদের চিকিৎসা করাতে পারছেন না।
এ অবস্থায় ধারাবাহিকভাবে চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে শ্রমিক-কৃষকসহ সাধারণ মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না বর্তমান সরকার।
বক্তারা আরো বলেন, পাটকলসহ জনগণের সব রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট হচ্ছে। দেশে চুরি-দুর্নীতির রাজত্ব কায়েম হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। সরকার এদের ধরতে করতে পারছে না। অথচ পাটকলশ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনার জন্য রাজপথে আন্দোলন-সংগ্রাম করলে প্রশাসন দিয়ে হামলা-মামলা করা হচ্ছে। নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।
বক্তারা চাকরিহারা ও ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি পাটকলের শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা মজুরি কমিশন, ২০১৫ অনুযায়ী প্রাপ্য বেতন, বকেয়া ছয়টি বিলসহ অন্য পাওনাদি পরিশোধের দাবি জানান। একই সঙ্গে শ্রমিকদের নামে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের সদস্যসচিব এস এ রশীদ, গণসংহতি আন্দোলন খুলনা জেলা সমন্বয়ক মুনীর চৌধুরী সোহেল, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) খুলনা জেলা সমন্বয়ক জনার্দন দত্ত নান্টু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট খুলনা জেলা সভাপতি আবদুল করিম, ছাত্র ফেডারেশন খুলনা মহানগর আহ্বায়ক আল আমিন শেখ, শ্রমিক নেতা খলিলুর রহমান, রুহুল আমিন, নুর ইসলাম প্রমুখ।
