দুর্নীতি প্রতিরোধ ও দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে জেলা বিএনপির ডাকা কর্মসূচিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সংর্ঘষে বিএনপির অন্তত ১০ নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্য ৬ জনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময় একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরকে দায়ি করেছে।
জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মজিবুর রহমান টোটন জানান, দুর্নীতি ও দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি রোধে কেন্দ্রীয় বিএনপির ডাকা কর্মসূচির অংশ হিসেবে পটুয়াখালীতে সমাবেশ করার উদ্যোগ নেয় জেলা বিএনপি ও তার সহযোগী অঙ্গসংগঠন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্মমহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেলের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব স্নেহাংশু সরকার কুট্টিসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা শহরের বনানী এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
মিছিলটি দলীয় কার্যালয় থেকে সরকারি কলেজের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশি বাধার মুখে পরে। পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে মিছিলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং স্বেছাসেবকলীগের নামধারী সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়।
মজিবুর রহমান টোটন দাবি করেন, হামলায় বিএনপির অন্তত ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ, তার সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতারা এবং পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। হামলায় আহত জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সফিউল বাশার উজ্জল, সদর থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জাকারিয়া আহম্মেদ, বিএনপি নেতা মো. দেলোয়ার হোসেন, কাজী মাহাবুব আলম, মীর মাকসুদুর রহমান, মো. বশির উদ্দিন, মো. মোস্তফা, মো. নুরুজ্জামান, মো. মশিউর রহমান মিলনসহ একাধিক নেতাকর্মী পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. রিফাত হাসান সজিব জানান, জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে জয়ের পর আজ সন্ধ্যায় পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের সম্মানে জেলা আওয়ামী লীগ এক সংবর্ধনা ও নৈশ ভোজের আয়োজন করেছে। সেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে তিনিসহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী মোটরসাইকেলযোগে বনানী এলাকা দিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছেলেন। হঠাৎ তাদের মোটরসাইকেলের ওপর বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। তাদের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় তাদের দুই কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
হামলার বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর জানান, বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল পটুয়াখালীতে চরম আকার ধারণ করেছে। এর আগেও তাদের এক গ্রুপের কর্মসূচিতে অন্য গ্রুপ হামলা করেছে। আজকেও সেই একই ঘটনা ঘটেছে। হামলার সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সদস্য জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি।
পটুয়াখালী সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, “পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে।”