বিএনপির বিভাগীয় মহাসমাবেশের আগে ১৮টি রুটে দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘটে অচল খুলনা। নছিমন-করিমন-ভটভটিসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়ে এ ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দূরদূরান্তের যাত্রীরা।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়।
এর আগে বুধবার (১৯ অক্টোবর) খুলনা জেলা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির জরুরি সভায় পরিবহন দুই দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সমিতির কর্মকর্তা, শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ও মালিকদের উপস্থিতিতে সভায় বলা হয়, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে সড়ক-মহাসড়কে নসিমন-করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিটিআরসির গাড়ি চলাচল করছে। অবৈধ নছিমন-করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিটিআরসির যত্রতত্র কাউন্টার বন্ধের দাবিতে ২১-২২ অক্টোবর পর্যন্ত দুই দিন মালিক সমিতির সব গাড়ি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ সকাল থেকে খুলনার সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঢাকা-খুলনা রুটের বাস ঢাকা থেকে যশোর ও গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলছে। সাতক্ষীরামুখী যেসব বাস যশোর হয়ে চলে, সেগুলো চলছে। তবে যেগুলো খুলনা হয়ে চলে, সেগুলো বন্ধ রয়েছে। মূলত খুলনায় কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না এবং খুলনা থেকে বিভিন্ন রুটে গাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে না।
এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে সমাজসেবা কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী নিয়োগ পরীক্ষা দিতে আসা ব্যক্তিদের ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। সব রুটের বাস বন্ধ থাকায় সকাল থেকে ইজিবাইক, ভ্যানে করে খুলনায় এসেছেন তারা। ছুটির দিনে যারা খুলনা বা এর আশপাশের জেলায় বেড়াতে যেতে চেয়েছিলেন, তারাও যেতে পারেননি।
সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, বিরোধী দলের কর্মসূচি বানচাল করতে পরিবহন ধর্মঘট ডেকে জনগণকে জিম্মি করা হয়েছে।
নগরীর ফুলবাড়ি গেটের বাসিন্দা শামীম হাসান জানান, তার ছোট ভাই দুদিনের ছুটিতে অসুস্থ মাকে দেখতে মেহেরপুর থেকে খুলনায় আসবেন। কিন্তু পরিবহন ধর্মঘটের কারণে আসতে পারছেন না।
খুলনা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস মালিক সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে নয়, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও মহাসড়কে নসিমন, করিমন, মাহিন্দ্রা, অতুল, ইজিবাইকসহ তিন চাকার যানবাহন চলাচলের প্রতিবাদে মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
বিএনপি নেতারা বলেছেন, পরিবহন ধর্মঘট ডেকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি ও নৌপথে সব বাহন বন্ধ করে দিলেও শনিবারের খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ জনসমুদ্রে রূপ নেবে।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এস এম শফিকুল আলম মনা বলেন, শনিবার (২২ অক্টোবর) নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে খুলনা বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই সমাবেশে যাতে নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হতে না পারে, এ কারণে পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কোনো কারণ ছাড়াই নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তাদের আটক করে সমাবেশ বানচাল করার চেষ্টা করছে। সব বাধা উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করা হবে। সমাবেশ হবে জনসমুদ্র।
বিএনপির বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু বলেন, মাগুরাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে খুলনায় চলে এসেছেন। সমাবেশ সফল হবে।