• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

মাইক্রোবাসে তুলে যাত্রীর মালামাল লুট, গ্রেপ্তার দুই


ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৩, ০৬:০০ পিএম
মাইক্রোবাসে তুলে যাত্রীর মালামাল লুট, গ্রেপ্তার দুই

কম খরচে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে মাইক্রোবাসে তুলে শারীরিক নির্যাতন করত তারা। একই সঙ্গে ওই যাত্রীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিকাশ বা নগদে টাকা হাতিয়ে নিত। এমন একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ কথা জানান পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন বরগুনা সদর থানার পরিরখাল এলাকার মো. শাহ আলম আকন (৩৫) ও একই জেলার পাথরঘাটা পৌরসভার নয় নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আবুল কালাম (৫০)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ১২ নভেম্বর বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর সামনে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাহাড়া মধ্যপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. লোকমান কাজীর ছেলে শহিদুল কাজীকে (৪৫) ঢাকা নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মাইক্রোতে উঠায় একটি চক্র। পরে শহিদুলের হাত-পা ও চোখ বেঁধে লোহার রেঞ্জ ও লোহার রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে। এ সময় তারা ১২ হাজার টাকা মূল্যের একটি মুঠোফোন ও নগদ সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপরে শহিদুলের মুঠোফোন ব্যবহার করে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে নগদ একাউন্টের মাধ্যমে আরও ৪৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

টাকা নেওয়ার পরও শহিদুলকে না ছাড়ায় তার পরিবারের সদস্যরা ভাঙ্গা থানায় বিষয়টি জানায়। পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের গতিবিধি শনাক্ত করে ভাঙ্গার বিভিন্ন জায়গায় চেকপোস্ট বসায়। পরে চক্রটি শহিদুলকে ভাঙ্গার পুলিয়া এলাকায় একটি নির্জন জায়গায় ফেলে ভাঙ্গার দিকে যায়।

পথিমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়ে ভাঙ্গার বগাইল টোল প্লাজার কাছে পুলিশ গাড়িটি থামানোর সংকেত দিলে তারা টোল প্লাজার ব্যারিয়ার ভেঙে দ্রুত পালিয়ে যায় তারা। পরে পুলিশ ভাঙ্গার মনসুরাবাদ এলাকায় ব্যারিকেড দিয়ে তাদের গাড়িটি থামায়। ওই সময় গাড়ির চালকসহ চারজন পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।

এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি সিলভার রঙের নোয়া মাইক্রোগাড়ি, বিভিন্ন কোম্পানির ৬টি মুঠোফোন, ‘এল’ আকৃতির একটি লোহার তৈরি রেঞ্জ, ২০ ইঞ্চি লম্বা একটি সরু লোহার রড, ২৯ হাজার ১৮০ টাকা ও তিনটি গামছা জব্দ করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আসামি শাহ আলমের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতিসহ ২১টি ও আবুল কালামের নামে হত্যা ও ডাকাতিসহ ৮টি মামলা রয়েছে।

পালিয়ে যাওয়া চারজন হলেন ওই মাইক্রোবাসের চালক বরগুনার তালতলী উপজেলার আংকুরজান পাড়ার সাগর হাওলাদার (৪৩), বরিশালের কাউনিয়া উপজেলার ভাটিখান গ্রামের মো. সানোয়ার হোসেন (৩৬), বরিশালের মুলাদী উপজেলার চরপদ্ম গ্রামের মো. জাকির হোসন (৩৮) ও পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার মো. ইলিয়াস (৩০)।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহানশাহ, ফরিদপুর  ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক তুহিন লস্কর, ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম, ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি এম এ জলিল প্রমুখ।

শহিদুলের ভাই কাজী ওয়াহিদুজ্জামান (৪০) বাদী হয়ে ১৩ নভেম্বর ভাঙ্গা থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনমা কয়েকজনকে ডাকাতি, শারীরিক নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোশাররফ হোসেন জানান, গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!