• ঢাকা
  • রবিবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ২ রবিউস সানি ১৪৪৬

সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে স্বাস্থ্য সহকারীর ফার্মেসিতে


বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৩, ০৯:৫৯ এএম
সরকারি ওষুধ বিক্রি হচ্ছে স্বাস্থ্য সহকারীর ফার্মেসিতে

ওষুধের গায়ে লেখা ‘সরকারি সম্পদ বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ’। এরপরও রমরমা ব্যবসা চলছে বিক্রি নিষিদ্ধ ওই সব ওষুধের। খোদ সরকারি হাসপাতালের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে জনসাধারণের জন্য সরকারি বরাদ্দের সিংহভাগ ওষুধই চলে যাচ্ছে খোলাবাজারে। যা উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে ফার্মেসিগুলোতে। যা কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অথচ বিনা মূল্যে দেওয়ার জন্য সরকারিভাবে ওষুধগুলো হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়।

সম্প্রতি বগুড়ার শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী মায়া খাতুন ও তার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক তাদের মালিকানাধীন জালাল ফার্মেসিতে হাসপাতালের সরকারি ওষুধ বিক্রিকালে হাতেনাতে ধরা পড়েন। এরপরই সরকারি ওষুধ বিক্রির রমরমা বাণিজ্যের বিষয়টি জানাজানি হয়। বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট চক্রের নানা অজানা কাহিনি।

সরকারি হাসপাতালের ওষুধ বিক্রির ঘটনায় ভুক্তভোগীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চক্রটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ৩ এপ্রিল বিকেলে বগুড়া জেলা সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাকিব হোসেন এই অভিযোগটি করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মায়া খাতুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরির পাশাপাশি বাগড়া হঠাৎপাড়া বাজারে একটি ওষুধের ফার্মেসি পরিচালনা করেন। ওই ফার্মেসিতে সার্বক্ষণিক থাকেন তার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক। অভিযোগ উঠেছে, ওই ফার্মেসি থেকে প্রতিদিনই হাসপাতালের সরকারি ওষুধ বিক্রি করা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ২৪ মার্চ একই গ্রামের নুরু হকের স্ত্রী সাজেদা বেগম ওষুধ কেনার জন্য চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ ওই ফার্মেসিতে যান। সেখান থেকে কিছু ওষুধ কেনার পর দাম বেশি মনে হওয়ায় প্রতিবেশী লোকজনকে ওষুধগুলো দেখান। এ সময় তার কেনা ওষুধগুলোর মধ্যে সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করা ওষুধ পাওয়া যায়। পরে ঘটনাটি জানিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য শাকিব হোসেনের নিকট সরকারি ওষুধগুলো জমা দেওয়া হয়।

মেম্বার শাকিব হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “সরকারি হাসপাতালে সরবরাহ করা সেফিক্সিম-৪০০সহ বেশকিছু ওষুধ ওই ফার্মেসিতে কেনাবেচার সময় হাতেনাতে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে ঘটনাটি জানতে চাইলে ওই ফার্মেসির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এমনকি আমাকে বলেন, সরকারি ওষুধ আমরা বিক্রি করব, তাতে তোমাদের কী, পারলে ঠেকাও।”

এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী মায়া খাতুন কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি। তবে তার স্বামী আবু বকর সিদ্দিক অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের ফার্মেসিতে কোনো সরকারি ওষুধ বিক্রি হয় না। সামাজিক দ্বন্দ্বের জেরে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান লিংকন অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “অভিযোগটি তদন্ত করা হবে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Link copied!