• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

সন্তানকে হত্যার দায়ে মায়ের যাবজ্জীবন


দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২২, ০৯:১০ পিএম
সন্তানকে হত্যার দায়ে মায়ের যাবজ্জীবন

দিনাজপুরে সন্তানকে হত্যার দায়ে সাদিয়া আক্তার আশা (২৫) নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ যাবিদ হোসেন এই রায় দেন। আসামি সাদিয়া আক্তার আশা জেলার পার্বতীপুর উপজেলার হরিরামপুর (ভাটিপাড়া) এলাকার এরশাদ আলীর স্ত্রী। রায় ঘোষণার সময় মামলার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সাদিয়া তার মেয়ে মাইমুনাকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি হরিরামপুরে থাকতেন এবং তার স্বামী এরশাদ কাজের সুবাদে ঢাকায় থাকতেন। ৬ জুলাই ২০১৭ তারিখ রাত ১১টা বাড়ির সবাই ঘুমাতে যায়। তবে ঘুমানোর আগে সাদিয়া তার শাশুড়ি রেজিয়া খাতুনকে নফল রোজা রাখার জন্য ভোর রাতে সেহেরি খাবে বলে ডেকে দিতে বলেন। এরপর শাশুড়ি ভোরে সাদিয়াকে ডাকতে যান। দরজা খুলে তিনি দেখতে পান সাদিয়া এবং তার মেয়ে মাইমুনা ঘরে মেঝেতে পড়ে আছেন। পরে রেজিয়া আক্তারের চিৎকারে পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা ঘরে আসলে মাইমুনাকে মৃত অবস্থায় পান। অন্যদিকে সাদিয়ার বাম হাত এবং ডান পায়ের কব্জিতে রক্তাক্ত জখম হয়ে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে সাদিয়ার জ্ঞান ফিরলে পরিবারের কাছে স্বীকার করে মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন।

আরও জানা যায়, ঘটনার দিন সাদিয়াকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে এই ঘটনায় সাদিয়ার দেবর ইব্রাহিম আলী বাদী হয়ে ৭ জুলাই ২০১৭ তারিখে পার্বতীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরিবারের ধারণা সাদিয়া তার মেয়েকে রাত ১১টা থেকে ভোর ৩টার মধ্যে যেকোনো সময় হত্যা করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) রবিউল ইসলাম রবি। তিনি বলেন, “এই ঘটনায় শিশু মাইমুনার চাচা ইব্রাহিম বাদী হয়ে পার্বতীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলাটি পরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে চার্জ গঠন হয়। মামলাটির সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত আসামিকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমান করেন।”

রবিউল ইসলাম রবি আরও বলেন, “এই ঘটনায় হয়ত তাদের পারিবারিক কোনো বিবাদ ছিল। তদন্তকারী কর্মকর্তা এবং সাক্ষীরা মনে করেন তার পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। তবে আসামি নিজেই একটা সাফাই সাক্ষী দিয়েছিল যে, ‘তার স্বামী নাকি তাকে সন্দেহ করত, অন্যজনের সঙ্গে তার পরকিয়ার সম্পর্ক ছিল।”

Link copied!