• ঢাকা
  • শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৫ জ্বিলকদ ১৪৪৬

মাহফিলের তবারক খেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত দুই শতাধিক


টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২২, ০৩:৩৬ পিএম
মাহফিলের তবারক খেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত দুই শতাধিক

টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের গজিয়াবাড়ি গ্রামে মাহফিলের তবারক খেয়ে দুই শতাধিক মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকালে রাহেলা খাতুন (৭২) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

জানা যায়, রোববার (১৩ নভেম্বর) রাতে গজিয়াবাড়ি গ্রামের আক্কাস আলীর বাড়িতে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওই মাহফিলে গ্রামের তিন শতাধিক লোক অংশ নেন। মাহফিল শেষে রাত ১১টার দিকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে অংশ নেওয়া গ্রামবাসীদের তবারক হিসেবে খিচুড়ি খেতে দেওয়া হয়।  

সোমবার (১৪ নভেম্বর) সকাল থেকেই ওই খিচুড়ি খাওয়া লোকজন অসুস্থ হতে শুরু করেন। এদিনের মধ্যে গ্রামের শতাধিক লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। সাধারণ শারীরিক অসুস্থতা মনে করে অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বাড়ি থেকেই খাবার স্যালাইন ও ওষুধ খান। মঙ্গলবার রাত থেকে ডায়রিয়া ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। পরে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় অনেককে দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর মধ্যে আজ সকালে গাজিয়াবাড়ি গ্রামের রাহেলা খাতুন মারা যান। এ ঘটনায় গ্রামে আরও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা হাসপাতালের একটি দল নিয়ে ওই গ্রামে আসেন। তারা গ্রামের প্রতিটি ঘরে গিয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দেন।

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত সরোয়ার হোসেন বলেন, “ওয়াজ মাহফিল শেষে রাতে খাবার দেওয়া হয়। খাওয়ার পর এক দিন ভালোই ছিলাম। মঙ্গলবার রাত থেকে পেটে মোচড় দিতে শুরু করে। গভীর রাতে অন্তত ১০ বার বাথরুমে গিয়েছি। পলিথিনে মোড়ানো খাবার খেইে ডায়রিয়া হয়েছে। গ্রামের প্রায় সবাই আক্রান্ত হয়েছে।”

আক্রান্ত হাসিনা আক্তার বলেন, “তবারক খাওয়ার সময় নষ্ট মনে হয়নি। কিন্তু খাওয়ার পর এ অবস্থা হবে বুঝিনি। রাত থেকেই পেটে ব্যথা করে পাতলা পায়খানা শুরু হয়েছে। বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছি।”

আটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও গজিয়াবাড়ি গ্রামের সিরাজুল ইসলাম মল্লিক বলেন, “ওয়াজ মাহফিলের খাবার খেয়ে সবাই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। খাবার সকালে রান্না করা হয়েছিল। পলিথিনে মুড়িয়ে রেখে রাতে খাবার দেওয়া হয়। খাবার নষ্ট হওয়ার কারণে এ ধরণের সমস্যা হতে পারে।”

দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক ফজলুর রহমান বলেন, “খবর পেয়ে আমাদের সব সদস্য নিয়ে এসে গ্রামের সবাইকে স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছি। দীর্ঘ সময় খাবার পলিথিনে রাখার কারণে বিষক্রিয়া তৈরি হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।”

দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, মাহফিলে খিচুড়ি খেয়ে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় গ্রামের দুই শতাধিক লোক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েকজন মেডিকেল অফিসার, নার্স নিয়ে আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি। দুটি ঘরকে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল বানানো হয়েছে। যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদের হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্তদের মাঝে খাবার স্যালাইন থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে।” 

Link copied!