• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ফিলিপাইনের আখ চাষে মহসিনের বাজিমাত


জয়পুরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৩, ০৮:১৫ পিএম
ফিলিপাইনের আখ চাষে মহসিনের বাজিমাত
ফিলিফাইন জাতের আখ ‘ব্ল্যাক সুগার কেইন’। ছবি-সংবাদ প্রকাশ

ফিলিফাইন জাতের আখ ‘ব্ল্যাক সুগার কেইন’ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন জয়পুরহাটের মহসিন আলী (৩০)। আখগুলো দেখতে কালো খয়েরি রঙের। লম্বায় সাধারণত ১২-১৬ ফুট। দেশীয় আখ থেকে এ জাতীয় আখের রয়েছে বেশ কিছু ভিন্নতা। এ আখের কাণ্ড খুব নরম, রসে ভরপুর আর মিষ্টিও অনেক বেশি।

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনুট ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের যুবক মহসিন আলী। এক বছর আগে ইউটিউব দেখে ফিলিপাইন জাতের এই কালো আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। পরে বগুড়া থেকে বীজ সংগ্রহ করে আখ চাষে সাফল্য পান।

কালাই উপজেলায় ধান আর আলুর জন্য বিখ্যাত হলেও তিনি ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ গ্রহণ করায় এলাকার লোকদের কাছে তাকে শুনতে হয়েছে নানান কথা। তারপরও অনেক বাধা বিপত্তিতেও তিনি থেমে থাকেননি।  

মহসিন আলী বলেন, “আমার ৫৫ শতাংশ জমিতে সব মিলিয়ে আখ চাষে খরচ হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আখ লাগানোর কারণে কাজ করতে অনেক সুবিধা, ফলনও অনেক বেশি আর দেখতে যেমন সুন্দর। আখগুলো খেতেও খুব রসালো ও মিষ্টি। প্রতি পিস আখ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা দরে। জমিতে যে পরিমাণ আখ আছে, তাতে এখন বিক্রি হবে প্রাই ৮-৯ লাখ টাকা। এ ছাড়া আখ থেকে চারা তৈরি করছি। চারাগুলো বাজারে খুব চাহিদা থাকায় প্রতি পিস ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর এ থেকেও বাড়তি আয় হচ্ছে। অনেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে ফোন দিয়ে চারা নিতে চাচ্ছেন। এখন আমার দেখাদেখি এলাকার অনেকেই এ আখ চাষে উৎসাহিত হচ্ছে।”

আখ দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা ফজলুর রহমান বলেন, “প্রথম থেকেই আমি আখগুলো দেখভাল করে আসছি। এখান থেকে এ আখ চাষে আমার অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় এই আখ চাষে লাভের অংশ নিজ চোখে দেখতে পাচ্ছি। আমাদের এলাকায় ধান ও আলুর জন্য বিখ্যাত হলেও এ আখ চাষের মতো লাভ নেই। তাই আমিও জমি পত্তন (বর্গা) নিয়ে নিজেই এ আখ চাষের উদ্যোগ নিয়েছি।”

কৃষক আ. আব্দুল মান্নান আকন্দ বলেন, “মহসিন ভাই এ আখ চাষ করার ফলে অনেকে হাসাহাসি করেছিল। তাদের ধারণা আলু আর ধান ফসলের জায়গায় কীভাবে আখ চাষ হবে। ছেলেটাকে ক্ষতির মুখে পরতে হবে। এখন এ আখের ব্যাপক চাহিদা আর ফলন খুব ভালো হওয়ায় অনেকেই এ আখ চাষে আগ্রহ প্রকাশ করছে।”

কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, “প্রথম থেকেই মহসিনকে আমরা সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে আসছি। ফিলিপাইনের কালো জাতের এ আখ সম্ভাবনাময় একটি ফসল। এমন সম্ভাবনাময় আখ চাষ দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে।”

তিনি আরও বলেন, “ইতোমধ্যে উপজেলার অনেকেই এই আখ চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আমরাও তাদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছি।”

Link copied!