নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী ও তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস এবং তাদের পরিবারের ৫ সদস্যসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৪৩ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
সোমবার (১৫ আগস্ট) রাত নয়টার দিকে হাতিয়া পৌরসভার চরকৈলাস গ্রামের বাসিন্দা আবদুল করিম (৪৭) বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলাটিতে মোহাম্মদ আলীর পরিবারের সদস্য ছাড়াও ১৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে ১০০ থেকে ১২০ জনকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলায় ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা সাবেক দুই সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস এবং তাদের ছেলে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক আলী ওরফে অমিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলায় সাবেক এমপির পরিবারের অন্য আসামিরা হলেন মোহাম্মদ আলীর ভাই ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুব মোর্শেদ লিটন (৫৯) ও তার ছোট ছেলে মাহতাব আলী অদ্রি (২৬)। আর মামলার অন্য আসামিরা সবাই উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী।
তবে মামলার এজাহারে উল্লিখিত ঘটনাটিকে সাজানো বলে দাবি করেছেন মোহাম্মদ আলীর ভাই মাহবুব মোর্শেদ। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, “সেদিন (৮ আগস্ট) হাতিয়ার এমপি পোল এলাকায় কোনো পাল্টাপাল্টি ধাওয়া কিংবা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। কারও মোটরসাইকেলেও আগুন দেওয়া হয়নি।রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার জন্যই ওই মামলা করা হয়েছে।”
মামলার এজাহারে বাদী আবদুল করিম উল্লেখ করেছেন, ৮ আগস্ট বিকেল চারটার দিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ও নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি চরকৈলাস গ্রামের ওছখালী-সাগরিয়া সড়কের এমপির পোল এলাকায় পৌঁছালে সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস, ভাই মাহবুব মোর্শেদ ও ছেলে আশিক আলীর নির্দেশে ও নেতৃত্বে মিছিলে সশস্ত্র হামলা চালানো হয়। এতে বাদী আবদুল করিম, সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নাছির ও হাতিয়া পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমান গণিসহ অনেকে আহত হন। হামলাকারীরা এ সময় সোনাদিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রুবেল উদ্দিনের একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিসান আহমেদ। তিনি বলেন, মামলায় ৫৪ ধারায় আটক হয়ে কারাগারে থাকা মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
রোববার রাত তিনটার দিকে হাতিয়া চরকৈলাস এলাকার বাড়ি থেকে সাবেক সংসদ সদস্য দম্পতি মোহাম্মদ আলী, আয়েশা ফেরদাউস ও ছেলে আশিক আলী অমিকে হেফাজতে নেয় নৌবাহিনী। সোমবার সকালে হাতিয়া থানায় সোপর্দ করলে পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে সোপর্দ করে। আদালত শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।