স্ত্রীকে অপমান করেছিল। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করায় হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রামের চারণকবি রাধাপদ রায়। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে এ কথা জানান তিনি।
এর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর রাধাপদ রায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
পল্লীকবি রাধাপদ রায় নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের গোড্ডারাপাড় বটতলা গ্রামের বাসিন্দা।
হামলার ঘটনায় রাধাপদ রায়ের ছেলে যুগল রায় রোববার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা করেন।
মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের বেডে শুয়ে রাধাপদ বলেন, “আমি সাধু সঙ্গ করি। কীর্তন-গান বাজনা করে জীবিকা নির্বাহ করি। গান, কীর্তন কিংবা সাধুসঙ্গের জন্য পূর্বে কখনো আমাকে কেউ কটূ কথা বলেনি বা খারাপ ব্যবহার করেনি। মূলত ৭ মাস পূর্বে আমার ছেলের সঙ্গে অভিযুক্তের বাক-বিতণ্ডা হয়। সেই রেশ ধরে আমাকে শনিবার বাঁশ দিয়ে মারধর করে।”
রাধাপদ রায় আরও বলেন, “প্রকৃত সত্য হলো আমি বাউল সাধক বা কবি বলে আমাকে মারধর করেছে এমনটা নয়। অভিযুক্ত কদুর রহমান আমার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়েছিলো ৭ মাস আগে। আমি এটার প্রতিবাদ করায় ৭ মাস পর আমার ওপর হামলা করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।”
কবির ছেলে যুগল রায় বলেন, “আমার বড় ভাইয়ের কাছে মো. মিলন নামের এক রাজমিস্ত্রি টাকা পেত। মার্চ মাসে সে টাকা চাইতে এলে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় কদুর রহমান মাঝখানে এসে সমাধানের চেষ্টা করে। আমার বাবা তখন তাকে বলেন আমাদের বিষয় আমরা দেখবো তোকে মাতব্বরি করতে হবে না। এরপর বিষয়টি সেখানে মিলনের সাথে সমাধান হওয়ার পর কদুর রহমান আমার মাকে নিয়ে অশ্লীল গালি দেন। তখন বাবা এর বিরোধিতা করেন। মূলত এর রেশ ধরে ৭ মাস পর বাবার ওপর হামলা করে। আমি থানায় মামলা করেছি।”
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ৭ মাস আগের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে পথরোধ করে শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার দিকে চারণকবি রাধাপদ রায়ের ওপর আক্রমণ চালায় মো. রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলী নামের দুই ভাই। অভিযুক্তরা একই ইউনিয়নের কচুয়ারপাড় এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর দুই ছেলে।
এদিকে ঘটনার ৪ দিন পার হলেও পুলিশ মূল দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে কদুর রহমানের স্ত্রী জামিলা খাতুন, শ্যালক সাগর মিয়া ও শ্বশুর জহুর আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সোমবার রাতে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, “ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সোমবার রাতে ২ নম্বর আসামির স্ত্রী, শ্যালক ও শ্বশুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত দুইজনের ঘটনায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে।”