পাবনার ঈশ্বরদীতে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে সংগঠনের দুই নেতার বাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার সাত দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ মামলা নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগপত্রে পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া) আসনের সংসদ সদস্যের ছেলের নাম থাকায় এই মামলা নিতে গড়িমসি করছে পুলিশ বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত দুই ছাত্রলীগ নেতা।
এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হাসান ও মুলাডুলি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বাপ্পি মালিথা থানাতে পৃথক দুটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ আমলে নিয়েই তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই সেটি মামলায় রূপ পাবে এবং পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এমপি-পুত্র তহিদুজ্জামান দোলন বিশ্বাসের নাম থাকায় অভিযোগটি মামলায় রূপান্তর হচ্ছে না এমন প্রশ্নে ওসি অরবিন্দ বলেন, আসামির পরিচয় বড় বিষয় নয়। ঘটনার সত্যতা নিরূপণ জরুরি। আসামি যে কেউ হতে পারে এবং তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হাসান বলেন, “থানাতে দেওয়া আমার অভিযোগে কিছু নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তারা নাম বাদ দিয়ে অজ্ঞাতনামা হিসেবে উল্লেখ করে অভিযোগ থানায় দেওয়ার পরামর্শ দেন।” তিনি আরও বলেন, “অভিযুক্ত ব্যক্তি প্রভাবশালী হওয়ায় ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আকার-ইঙ্গিতে মামলা করে কোনো লাভ হবে না বলে বুঝিয়ে দিচ্ছেন।”
মুলাডুলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বাপ্পি মালিথা বলেন, “ঘটনা ঘটনার সাত দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক মনে হচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) সকালে তিনি ১০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে এজাহার জমা দেন। সে অনুযায়ী এখনো পুলিশের কোনো পদক্ষেপ লক্ষ করা যায়নি।
গত ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঈশ্বরদীতে নানা আয়োজন করা হয়। আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে শহরের পোস্ট অফিস মোড়ে সমবেত হয় দলীর নেতা-কর্মীরা। ঠিক এই সময় পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হাসান ও মুলাডুলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বাপ্পি মালিথার বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
ছাত্রলীগ নেতা মারুফ ও বাপ্পি দাবি করেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ নুরুজ্জামান বিশ্বাসের ছেলে তহিদুজ্জামান দোলন বিশ্বাস, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খালেক মালিথার ছেলে মিজান মালিথাসহ আরও বেশ কয়েকজন তাদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।