যশোর জেলার শার্শা উপজেলার কৃষি উদ্যোক্তারা বস্তায় মাটি ভরে আদা চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। উচ্চমূল্যের মসলা ও ভেষজ ওষুধ হিসেবে আদার ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। বার মাসই বাজারে এর দাম বেশ চড়া থাকে। তাই কৃষকরা পরিবারের প্রয়োজন মেটাতে এবং বাড়তি আয়ের আশায় বস্তায় আদা চাষ শুরু করেছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় পরীক্ষামূলক ও বাণিজ্যিকভাবে বস্তায় আদা চাষ করছেন কৃষকরা। শার্শার সদর ইউনিয়ন, বাগাআঁচড়া ও পুটখালী ইউনিয়নের কৃষকরা বাণ্যিজিকভাবেই পরিত্যক্ত জায়গা কাজে লাগিয়ে জৈব সারমিশ্রিত মাটিতে এই আদার চাষ করছেন। এতে উপজেলার কৃষি বিভাগ বিভিন্নভাবে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগীতা করছেন।
সদর ইউনিয়নের কৃষক ইসমাইল হোসেন বলেন, “কৃষি বিভাগের সহযোগীতায় এই প্রথম বাণ্যিজিকভাবে বস্তায় আদা চাষ করেছি। মাটির সঙ্গে গোবর সার, খইল, ছাইসহ রাসায়নিক সার মিশিয়ে ১ হাজার তিনশ বস্তায় আদা চাষ করেছি। গত এপ্রিলের প্রথম দিকে আদার কন্দগুলো রোপণ করি বস্তার মাটিতে। এখনো কোনো রোগবালাই দেখা দেয়নি। পতিত জায়গা কাজে লাগিয়ে লাভের আশা করছি।”
পান্তাপাড়া গ্রামের কৃষক মোস্তফা আজিজুর হক বলেন, “মাঠের জমিতে আদা চাষ করা সম্ভব নয় বিধায় বাড়ির পাশেই আদা চাষ করছি। অবসর সময়ে নিজেই পরিচর্যা করি। রোপণের আট মাস পর আদা সংগ্রহ করা যাবে। বস্তাপ্রতি এক কেজি করে আদা পাওয়া যেতে পারে।”
উপজেলার অন্যান্য আদা চাষীরা জানান, বস্তায় আদা চাষে আলাদা জমির প্রয়োজন হয় না। বস্তা স্থানান্তর করা যায় বিধায় অতিবৃষ্টি বা বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। রোগের আক্রমণও কম হয়। বাড়ির আশপাশের পরিত্যক্ত, ছায়াযুক্ত যুক্ত জায়গা কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয় করা যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, “কৃষি বিভাগ থেকে আদা চাষ বৃদ্ধিতে বস্তা আদা সার ও কীটনাশক কৃষককে দেওয়া হয়েছে। কৃষকদের নতুন এ পদ্ধতিতে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বাড়ির আশপাশের ছায়াযুক্ত জায়গা, বাগান, পতিত স্থানে সহজেই এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায়।”
দীপক কুমার আরও বলেন, “এপ্রিল-মে আদা চাষের উপযুক্ত সময়। বস্তায় আদা চাষ করলে আলাদা জমির দরকার হয় না। বস্তার মাটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। আদার দাম অনেক বেশি। আমরা কৃষককে আদা চাষে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি কারিগরি সহায়তা ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি।”
 
                
              
 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    





































