• ঢাকা
  • শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৫ জ্বিলকদ ১৪৪৬

৩ জেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার উপক্রম


চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: অক্টোবর ১, ২০২১, ০৭:৩৬ পিএম
৩ জেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হওয়ার উপক্রম

মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও দেশের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ মুক্তিযুদ্ধের নিরব সাক্ষী হিসেবে শুভপুর সেতুটি সংস্কার ও পুনর্নির্মাণের জন্য কয়েক বছর ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন তিন জেলায় বসবাসকারী জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ মানুষ। ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কে অবস্থিত ফেনী-চট্টগ্রাম-খাড়গাছড়ি জেলার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম ঐতিহাসিক শুভপুর সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।

ফেনী নদীর উপর অবস্থিত সেতুটি ধসে পড়ার আশঙ্কায় সেতুর মুখে লোহার পিলার দিয়ে পথ বন্ধ করে দেওয়ার পরও ঝুঁকি নিয়ে হালকা যানবাহন চলাচল করছে। দীর্ঘ সময় ধরে ভারী যানবাহন বন্ধ থাকায় মিরসরাই-ছাগলনাইয়া উপজেলা ও খাগড়াছড়ি জেলার হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রতিদিন অর্ধশত কিলোমিটার পথ ঘুরে বিকল্প পথে অর্থ ও সময় নষ্ট করে বেশিরভাগ যানবাহনকে গন্তব্যে যেতে হয়।

জানা গেছে, দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক গুরুত্বের কথা বিবেচনায় নিয়ে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার ফেনী নদীর ওপর শুভপুর সেতুটি স্থাপনের নকশা প্রণয়ন করেছিল। ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫২ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার ৩৭৪ মিটার দীর্ঘ ফেনী নদীর ওপর শুভপুর ব্রিজ নির্মাণ করে।

দীর্ঘ ৬৯ বছর ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়ক হয়ে ব্যবসায়িক ও আর্থিক প্রয়োজনে শুভপুর ব্রিজ দিয়ে সড়ক পথে চট্টগ্রাম বিভাগের যানবাহন চলাচল করেছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্রিজ এলাকায় কয়েক দফায় মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে সম্মুখযুদ্ধ হয়। ওই সময় গোলার আঘাতে সেতুটি বিধ্বস্ত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে কয়েক দফায় ব্রিজটি মেরামত করলেও পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। ভারী ও মাঝারি যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ও প্রতিবন্ধকতা থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। ফেনী নদীতে ব্রিজর পিলারের নিকটবর্তী স্থান থেকে বালু উত্তোলনের ফলে কয়েকটি পিলারের গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে। ইস্পাতের পাতের ওপর নির্মিত এ অঞ্চলের সর্ব প্রথম স্থাপিত ব্রিজটি ধসে পড়লে বড় ধরণের প্রাণহানি হওয়ার পাশাপাশি এ অঞ্চলের মানুষের দুর্বিসহ ভোগান্তি পোহাতে হবে।

মিরসরাই উপজেলার ১নং করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন জানান, শুভপুর ব্রিজের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চলছে। ব্রিজটি পুনরায় নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ব্রিজটি পুনর্নির্মিত হলে এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে একটি বড় স্বপ্ন পূরণ হবে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ফেনী জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী ডক্টর মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ বলেন, শুভপুর ব্রিজটি পুনর্নির্মাণের জন্য ডিজাইন তৈরি ও সয়েল টেস্ট করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রিজটি চারলেন বিশিষ্ট হবে। ব্রিজটি নির্মিত হলে ফেনী, চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি জেলায় সড়ক যোগাযোগ উন্নত হওয়ার পাশাপাশি রামগড়ে নির্মিতব্য স্থলবন্দরের পণ্য পরিবহনেও গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। 

Link copied!