• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২০ মুহররম ১৪৪৫
ভয়াল ২১ আগস্ট

‘১৭ বছর ধরে ১৮শ স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছি’


সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২১, ১০:০৮ পিএম
‘১৭ বছর ধরে ১৮শ স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছি’

১৭ বছর ধরে ১৮শ স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াছেন মাহবুবা পারভিন। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনিও যোগ দিয়েছিলেন সমাবেশে। সবে এক বছর রাজনীতির অভিজ্ঞতা তখন মাহবুবার। কিন্তু রক্তের তেজ আর আওয়ামী লীগের প্রতি ভালোবাসায় বুঝার কায়দা ছিল না। বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হল গ্রেনেড। নিমিশেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন মাহবুবা। ১৭ বছর ধরে ১৮শ স্প্লিন্টার যন্ত্রণা করে মাহবুবা পারভিনের শরীরের।

সেই দিনর অভিশাপ্ত স্মৃতিগুলো সাভার পৌর মহল্লার ব্যাংক কলোনির ৩৬ নম্বর বাড়িতে বসে প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপ করছিলেন মাহবুবা পারভিন।

২০০৩ সালে বর্তমান সাভার পৌর মেয়র হাজী আব্দুল গণির মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি মাহবুবার। তারপর থেকেই রাজনৈতিক বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। ২০০৪ সালে মাহবুবা ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ছিলেন। রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার সুবাদে ঢাকায় সভানেত্রীর বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নিতেন তিনি। ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে মাহবুবা অংশ নিয়েছিলেন বেলা ১২টায়। বিকেল ৩টায় সমাবেশ শুরু হয়। তবে গ্রেনেড হামলার সময় মঞ্চের নিচে ছিলেন মাহবুবা। হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় গ্রেনেড। এর কিছু সময় পর রক্তাক্ত অবস্থায় মাঠিতে লুটিয়ে পড়ে। 

মাহবুবা বলেন, “সেদিন কেউ ভাবে নেই আমি বেঁচে আছি। ভ্যানে করে অন্য সবার সঙ্গেই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেই সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আশীষ কুমার মজুমদারকে আমার পরিবারের সদস্যরা ফোন দেয়। তখন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে আমার লাশের খোঁজ করছিলেন। কিন্তু দেখলেন দ্বিতীয় তলায় ফ্লোরে আমি শুয়ে আছি। তখন আমার চিকিৎসার জন্য আরও অন্য হাসপাতালে ভর্তির চেষ্টা করলেন। কিন্তু স্প্লিন্টারের ক্ষত-বিক্ষত দেখে হাসপাতালে ভর্তি নিচ্ছিল না। পরে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কলকতার পিয়ারলেস হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানায় মাথায় তিনটা স্প্লিন্টার আছে। সেই সঙ্গে শরীরে ১৮শ স্প্লিন্টার রয়েছে।”

স্প্লিন্টারের ক্ষতগুলো কষ্ট দিলেও ভুলে থাকতে পারি দেশনেত্রীর শেখ হাসিনার ভালোবাসা পেয়ে উল্লেখ করে মাহবুবা বলেন, “শেখ হাসিনার ভালোবাসা চেয়ে ছিলাম, তা পেয়েছি। পূরণও হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে অবমূল্যায়ন হয়েছি বার বার। আওয়ামী লীগের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে ছিলাম। মাইকে আমার নামটি বার বার বলতে বলেছি। কিন্তু বলেনি। উল্টে স্থানীয় এক নেতা অপমান করে বলে ‘আপনি নেত্রীর বুকে আছেন, আপনি নেত্রীর বুকে যান। সাভারে কি?’

Link copied!