• ঢাকা
  • বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩০, ১৩ শা'বান ১৪৪৬

বেতন চাওয়ায় নারী শ্রমিককে রক্তাক্ত করলেন আ. নেতা  


গাজীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২১, ০৯:০৭ পিএম
বেতন চাওয়ায় নারী শ্রমিককে রক্তাক্ত করলেন আ. নেতা  

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার লাক্সমা নামক পোশাক কারখানায় বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আসাদের নেতৃত্বে মারধর করা হয় বলে জানান শ্রমিকরা।

বুধবার (১৪ জুলাই) বিকেলে জুন মাসের বকেয়া বেতন, জুলাই মাসের হাফ বেতন ও বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভের সময় নারী শ্রমিক মোমেনার মাথায় ইট মারলে তিনি রক্তাক্ত হন। এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হন।  

পৌর এলাকার দক্ষিণ ভাংনাহাটির ‘লাক্সমা ইনার ওয়্যার লিমিটেড’ গার্মেন্টস কারখানায় বেতন ভাতার দাবিতে আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করে আন্দোলন চালান।  

গুরুতর আহত শ্রমিক মোমেনা আক্তার বলেন, “প্রতি মাসেই শ্রমিকদের বেতন নির্দিষ্ট সময়ে পরিশোধ করে না, প্রতি ঈদের সামনে বেতন ভাতার দাবিতে শ্রমিকদের আন্দোলন করতে হয়। আমাদের আওয়ামী লীগ নেতা আসাদ খানের নেতৃত্বে মারধর করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই, আমাদের বকেয়া বেতন চাই।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকরা বলেন, গত ঈদে আমাদের অর্ধেক বোনাস দেওয়া হয়েছে। এবারও আমাদের বেতন বোনাস না দেওয়ার জন্য বিভিন্ন পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন কাজে যোগ দেওয়া অসংখ্য শ্রমিকদের দুই মাস অতিবাহিত হলেও তাদের বেতন দেওয়া হয়নি। আন্দোলনরত শ্রমিকরা বেতন ভাতার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা শুনতে চান মালিকপক্ষের কাছ থেকে, নইলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া তাদের সামনে কোনো পথ নেই বলেও তারা জানান। 

শ্রমিকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে জানানো হয় মালিকপক্ষ পুলিশ এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের ম্যানেজ করে শ্রমিকদের ভয় ভীতি প্রদর্শন করে বিভিন্ন সময় তাদের উপর অমানবিক চাপ সৃষ্টি করে কাজ করতে বাধ্য করে থাকে। এবারও পুলিশের ভয় দেখানো হচ্ছে।

ভুক্তভোগী শ্রমিকদের একজন বলেন, করোনাকালীন সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা কাজ করে যদি বেতন ভাতা না পাই তবে আমরা কোথায় যাব। ঈদের আগে টাকা না পেলে ঘরভাড়া, দোকান বকেয়া দিতে পারবো না, বউ পোলাপান নিয়ে পথে বসতে হবে।

এ বিষয়ে বারবার চেষ্টা করেও মালিক পক্ষের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ফোরকান খান জানান, বিষয়টি প্রশাসন এবং শ্রমিকদের বিষয়, পুলিশ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছে। খুব শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কারখানার সম্মুখে আন্দোলনরত শ্রমিকদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। নিরীহ শ্রমিকদের উপর মালিকপক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে চড়াও হতে দেখা গেছে। পুলিশ নির্বিকার ভাবে পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে।

Link copied!