• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০১ জুলাই, ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২, ০৫ মুহররম ১৪৪৬

চাকরি পাচ্ছেন ‘ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া’ আলমগীর


বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২, ০৫:০৭ পিএম
চাকরি পাচ্ছেন ‘ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাওয়া’ আলমগীর

‘দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’ বগুড়ার সেই আলমগীর কবিরকে চাকরি দিচ্ছে পুলিশ।

বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎকার শেষে এ কথা জানান পুলিশ সুপার (এসপি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।

এসপি জানান, আলমগীর কবিরকে চাকরি দেওয়া হবে। তার যোগ্যতা অনুযায়ী পদ দেবে ‘স্বপ্ন সুপার সপ’।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান আলমগীর কবির। সেখানে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে আলমগীরের সঙ্গে আলাপ করেন এসপি। এ সময় তার কাছে থেকে বিস্তারিত শোনেন তিনি।

পুলিশ সুপার বলেন, “আলমগীরের ওই বিজ্ঞাপনের সত্যতা যাচাই করার জন্য তার সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। কথা বলে মনে হয়েছে, তার চাকরি আসলেই প্রয়োজন।”

চাকরি পাওয়ার বিষয়ে আলমগীর কবির জানান, আর্থিক অনটনের কারণে তার তিনবেলা ঠিকমতো খাওয়া হচ্ছিল না। সেই কারণে উপায় না দেখে সম্প্রতি তিনি ‘বিজ্ঞাপনের’ আশ্রয় নেন।

গত ২৭ জানুয়ারি সংবাদ প্রকাশ ‘দু-বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চান আলমগীর’ শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি বিশেষ সাড়া ফেলে। আলমগীর কবির বগুড়ার জহুরুল নগর এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ‘শুধুমাত্র দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই’ প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এমন লেখা পোস্টার সাঁটিয়ে দেন। এরপর তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পেজেও দেন। সেই পোস্টটি ভাইরাল হয়। অন্যদিকে দেশি মিডিয়া ছাড়াও তার পোস্টটি নিয়ে আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও নিউজ করা হয়।

বিশেষ প্রতিবেদনে ঘটনা সত্যতা যাচাই করতে সংবাদ প্রকাশের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় আলগীর কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘‘আমি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করা একজন ছাত্র। টিউশনি করিয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা পাই। এটা আমার সরকারি বিভিন্ন চাকরি ইন্টারভিউ দিতে ঢাকার যাতায়াতে চলে যায়। বাবা একজন অসুস্থ মানুষ। তিনি পল্লী চিকিৎসক ছিলেন। আমাদের হাটে একটা দোকান ছিল। এটার ভাড়া দিতে হতো ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। আর দোকানটি নেওয়ার আগে জামানত দিতে হয়েছে ৩০ হাজার টাকা।’’

আলমগীর আরো বলেন, ‘‘গত বছর করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন বাবা। যার কারণে সেই দোকানটিও বিক্রি করতে হয়েছে। আমরা তিন বোন এবং দুই ভাই। বোনদের বিয়ে হয়েছে। আর আমার ছোট ভাইটা প্রতিবন্ধী। আমার তো কিছু করার নেই। তাই পড়ার বিনিময়ে হলেও যেন দু’বেলা ভাত খেতে পারি, সেজন্যই বিজ্ঞাপনটি দিয়েছি।”

Link copied!