প্রকৃতি সেজেছে শরতের আলিঙ্গনে। সময় এসেছে সনাতন ধর্মের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার। দেবী দূর্গাকে সাজাতে কেরানীগঞ্জে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা। আর মাত্র কয়েকদিন পরই ঢাক-ঢোলের শব্দে মুখর হবে পূজা মণ্ডপগুলো। উপজেলায় এবছর ১৪৭ টি মণ্ডপে আনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা। এর মধ্যে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন এলাকায় ৯২টি ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন এলাকায় ৫৫টি মণ্ডপে এ পূজার আয়োজন করা হবে।
আগামী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দূর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা। আয়োজকরা বলছেন করোনার মাহামারির কারণে এবারাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপন করা হবে। এবছর দেবী দুর্গা মর্তে আসবেন ঘোটক বা ঘোড়ায় চরে যাবেন পালকিতে। হিন্দু ধর্মমতে এই দুটির অর্থই অশুভ। তাই তো সব ধরণের মহামারি থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ পূজা সংশ্লিষ্টদের।
সরেজমিনে পূজা মণ্ডপগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, পূজা মণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। এরই মধ্যে মাটির কাজ শেষ করে রং তুলির আঁচড়ে প্রতিমাগুলো ফুটিয়ে তোলার পাশাপাশি চলছে সাজ-সজ্জার কাজও। এছাড়া কয়েটি মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছেন কারিগররা।
ব্রাহ্মণকিত্তার মালোপাড়া মন্দিরের প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ করেছেন কারিগর অলক পাল।
অলক পাল জানান, এ বছর জিনিসপত্র অনেক দাম দিয়ে কিনতে হয়েছে। তবে গত বছর এর তুলনায় এ বছর প্রতিমা তৈরির অর্ডার বেশি পেয়েছেন। তাই ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় যেয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। ইতিমধ্যে ৩টি মণ্ডপের কাজ শেষছেন তিনি।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখর চন্দ্র সরকার বলেন, গত বছর করোনা মহামারির কারণে কেরানীগঞ্জের সব জায়গায় দুর্গাপূজার আয়োজন করা যায়নি। তবে এবছর সরকারি সকল নিয়মের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপজেলায় ১৪৭টি মণ্ডপে দূর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। এর মধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ৫৫টি ও কেরানীগঞ্জে মডেলে ৯২ টি পূজা মণ্ডপে এ আয়োজন করা হবে। তবে সকলের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সব গুলো পূজা মণ্ডপে।
কেরানীগঞ্জ মডেল পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি গোপাল সরকার বলেন, গতবছরের ন্যায় সকল ভক্তদের মুখে মাস্ক থাকবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতিমা দর্শন করতে হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কেরানীগঞ্জ সার্কেল) শাহাবুদ্দিন কবীর বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রতিটা মণ্ডপ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নজরদারিতে থাকবে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, আগামী ১১ অক্টোবর সারাদেশের ন্যায় কেরানীগঞ্জেও পালিত হবে শারদীয় দূর্গাপূজা। তবে অবশ্যই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা উদযাপন করতে হবে। কারণ করোনার প্রকোপ কমেছে। কিন্তু পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। ঝুঁকি এখনো রয়েছে। তাই বাধ্যতামূলক স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠান পালন করতে হবে মণ্ডপগুলোতে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যে ত্রাণ ও আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে তা আগামী ৮ অক্টোবর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে হস্তান্তর করা হবে।