• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ ১৪৩২, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

থানার ভেতর ঘুমন্ত পুলিশ, হাতকড়ায় সেলফি—গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক পোস্ট


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫, ০৭:২১ পিএম
থানার ভেতর ঘুমন্ত পুলিশ, হাতকড়ায় সেলফি—গ্রেপ্তার ছাত্রলীগ নেতার ফেসবুক পোস্ট

থানার ভেতরে পুলিশি হেফাজতে থেকেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়—এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে চট্টগ্রামের পটিয়ায়। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতা থানার ভেতরে ঘুমন্ত পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সেলফি তুলে তা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। শুধু তাই নয়, হাতকড়া পরা অবস্থার ছবি ও ভিডিও কলে কথা বলার দৃশ্যও প্রকাশ করেন তিনি।

ঘটনাটি বুধবার (গতকাল) রাতে পটিয়া থানায় ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ও পোস্ট ভাইরাল হলে প্রশ্ন ওঠে—পুলিশি হেফাজতে থাকা একজন আসামির কাছে মোবাইল গেল কীভাবে? আবার তাঁকে হাজতে না রেখে কেন থানার ভেতরে রাখা হয়েছিল?

গ্রেপ্তার ওই ছাত্রলীগ নেতার নাম শোয়াইব উল ইসলাম ওরফে মহিম (২১)। তিনি পটিয়া উপজেলার বড়লিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি এবং স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে। ‘শোয়াইব উল ইসলাম মহিম’ নামেই তাঁর ফেসবুক আইডি রয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার রাত প্রায় ১টার দিকে পটিয়া পৌরসভার কাগজীপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিজয় দিবস উপলক্ষে যুবলীগের একটি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার অভিযোগে তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আগে থেকেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে।

গ্রেপ্তারের পর থানায় নেওয়া হলে শোয়াইব প্রথমে নিজের ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, “আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমি পটিয়া থানায়। দেখা হবে আবারও, ফিরব বীরের বেশে কোনো একদিন। জয় বাংলা।”
এরপর হাতকড়া পরা ছবি পোস্ট করে লেখেন, “এই দিন দিন নয়, দিন আরও আছে।”

সবচেয়ে আলোচনার জন্ম দেয় থানার ভেতরে দায়িত্বরত অবস্থায় চেয়ারে বসে ঘুমাতে থাকা এক পুলিশ কনস্টেবলের সঙ্গে তোলা সেলফি। সেই ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “ঘুম ভালোবাসিরে এএএ...। জীবন যেমনই হোক, বিনোদন মিস করা যাবে না।”

এ ছাড়া আরেকটি ছবিতে তাঁকে তুহিন নামের এক ছাত্রলীগ নেতার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে দেখা যায়। ওই ছবিটি তুহিন নিজেই ফেসবুকে পোস্ট করে লেখেন, “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আপসহীন লড়াইয়ে দখলদার বাহিনীর হাতে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার শোয়াইব-উল ইসলাম মহিমের নিঃশর্ত মুক্তি চাই।”

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল হক বলেন, গ্রেপ্তারের পর শোয়াইবকে থানায় রেখে অভিযানে বেরিয়ে যায় পুলিশ দল। সেই সুযোগে নিজের কাছে গোপনে রাখা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে তিনি এসব ছবি ও পোস্ট দেন। পরে তাঁর কাছ থেকে ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক তল্লাশিতে সেটি ধরা পড়েনি।

ওসি আরও জানান, দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ওই সময় দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিভাগীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
শোয়াইবকে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল নাগাদ শোয়াইবের ফেসবুক আইডিতে আর কোনো পোস্ট দেখা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ভাইরাল হওয়ার পর পোস্টগুলো মুছে ফেলা হয়েছে। তবে এর আগেই স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ বিভাগের আরো খবর

Link copied!