• ঢাকা
  • সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২, ৯ সফর ১৪৪৬

‘শিগগিরই অর্থপাচারে জড়িতদের তালিকা প্রকাশ হবে’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২, ০৫:১৯ পিএম
‘শিগগিরই অর্থপাচারে জড়িতদের তালিকা প্রকাশ হবে’

শিগগিরই মানিলন্ডারিংয়ে জড়িতদের তালিকা প্রকাশ হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “মানিলন্ডারিংয়ে অনেকের নাম বেড়িয়ে এসেছে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।”

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে গণভবনে ভারত সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার দৃঢ় বিশ্বাস, উভয় দেশের জনগণের কল্যাণে এই সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশ ও ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়া শিগগিরই একটি সমৃদ্ধশালী অঞ্চলে পরিণত হবে।”

সরকার প্রধান বলেন, “ভারতীয় নেতৃত্বের শীর্ষ পর্যায়ে, সংবাদ মাধ্যমে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আমি বাংলাদেশের জন্য যে প্রীতি ও সৌহার্দ্য লক্ষ্য করেছি তা সত্যিই অসাধারণ। এই প্রীতির সম্পর্ককে সুসংহত করে আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই।”

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দীর্ঘ তিন বছর বিরতির পর ভারত সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। এ সফরে আমরা ভারতের আন্তরিকতার বহিঃপ্রকাশ ও সৎ প্রতিবেশী হিসেবে সমতা ও শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দু-দেশের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার লক্ষ্য করেছি।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জ্বালানি তেলের সংকট সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে ভারত। শিলিগুড়ি থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে দেশে ডিজেল আসবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই সফরে সহযোগিতার যেসব ক্ষেত্র চিহ্নিত হয়েছে এবং বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করলে উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে বলে আমি মনে করি।”

এর আগে, চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত ৫ সেপ্টেম্বর ভারতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই দিনই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শংকর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।

সফর শেষে বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

চার দিনের সফরে শেখ হাসিনা ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ ছাড়া শেখ হাসিনার সঙ্গে পৃথক সাক্ষাৎ করেন ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়নবিষয়ক মন্ত্রী কিষাণ রেড্ডি, ভারতের আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি প্রমুখ।

সফরের দ্বিতীয় দিনে শেখ হাসিনা হায়দরাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও একান্ত বৈঠক করেন। মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান এবং তাকে আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর অভিন্ন সীমান্ত নদী কুশিয়ারা থেকে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহারসহ ভারতের সঙ্গে সাতটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

যে কয়েকটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত কুশিয়ারা নদী থেকে পানি প্রত্যাহার নিয়ে সমঝোতা। এছাড়া দুই দেশের বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতা, উভয় দেশের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের মধ্যে সমঝোতা, রেলের আধুনিকায়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। তবে, তিস্তা নিয়ে এ সফরেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

এ ছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের যৌথ উদ্যোগের বেশ কয়েকটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে খুলনার রামপালে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। পরে যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশি পণ্য তৃতীয় কোনো দেশের রপ্তানির জন্য ফ্রি ট্রানজিটের প্রস্তাব দেয় ভারত। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও জোরদার করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

সফরকালে হায়দারাবাদ হাউসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও শেখ হাসিনার মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান ও মানব পাচার রোধ সংক্রান্ত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পায়।

ভারত সফরকালে আজমির শরিফ পরিদর্শন ও হজরত খাজা মঈনুদ্দিন চিশতির (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Link copied!