বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা তৃতীয় ধাপের অবরোধ কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এতে রাজধানীর অভ্যন্তরীণ বাস চলমান থাকলেও স্বাভাবিক দিনের তুলনায় কমে এসেছে দূরপাল্লার বাস চলাচল।
বুধবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর গাবতলী ও মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, দূরপাল্লার বাসগুলো তাদের নিজস্ব স্থানে স্থবির অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। নির্ধারিত টিকিট কাউন্টারগুলো খোলা থাকলেও যাত্রী সাধারণের সমাগম নেই। অনলাইন টিকিট বিক্রির তালিকাতেও দেখা গেছে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪টি টিকিট বিক্রির চিত্র। এসময় যাত্রাকালীন বাসগুলোর ভেতর ঘুরে দেখা যায় সিটে বসে আছেন সর্বোচ্চ ৫ জন যাত্রী।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যাত্রী সংকটের কারণে দূরপাল্লার বাস স্থবির হয়ে আছে। অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে গুটি কয়েকজন যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যাচ্ছে বাসগুলো।
গাবতলী এলাকায় কথা হয় মনোয়ার হোসেন নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বোয়ালমারি যাওয়ার উদ্দেশে এসেছেন এখানে। দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে এই যাত্রী বলেন, “বাস পাওয়ার জন্য এখানে এসেছি। কিন্তু দূরপাল্লার বাস না পাওয়ায় এখন ভেঙে ভেঙে লোকাল বাসে করে যেতে হবে। এতে খরচ বেশি হবে। দূরপাল্লার বাসে উঠলে এক টিকিটে এবং কম খরচে যাওয়া যায়। এটা দুর্ভোগ ছাড়া আর কিছুই না।”
সুমন নামের এক যাত্রী বলেন, “বাস ছাড়বে বলেছে। যাত্রী নাকি কম। তাই যাত্রী তাদের পরিমাণ মতো যাত্রী হলে তখন ছাড়বে। যখন অবরোধ ছিল না, তখন ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর পর বাস পাওয়া গেলেও এখন ১ ঘণ্টা পরপর যাচ্ছে। এতে শুধু আমি না, সবাই সময় নিয়ে সংকটে পড়বে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌঁছাতে পারবে না।”
হানিফ পরিবহনের চালক আতাউর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, “আমি ঠাকুরগাঁও থেকে একটি বাস নিয়ে ঢাকায় এসেছি। যাত্রী একেবারে নেই বললেই চলে। এতে আমরাও লোকসানের মুখে পড়ছি। এখন খরচ উঠলেই বাসগুলো ছাড়তে হচ্ছে। লাভের আশা তো দূরের কথা। কারণ, একটি বাস আপ-ডাউনে (যাওয়া-আসা) চালাতে হলে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। লোকসান গুনে কেউ ব্যবসা করবে না, এটাই স্বাভাবিক।”
মহাখালি বাস টার্মিনাল এলাকার এনা পরিবহনের টিকিট কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা শহিদ বলেন, “যাত্রী ২০ থেকে ২৫ জন নিয়ে ছাড়া হচ্ছে। কিন্তু আগের মতো বাস ছাড়া যাচ্ছে না। আগে যেখানে ১৯ মিনিট পর পর ছাড়তে হতো। এখন সেখানে আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা পরপর ছাড়তে হচ্ছে। যাত্রী সংকটের কারণে এই অবস্থা।”