ঈদুল আযাহা এলেই ষাঁড় কেনার হিড়িক পড়ে যায়। পশুরহাটে গিয়েই সবার চোখ পড়ে বড় ষাঁড়ের ওপর। আকার ভেদে দামও হাঁকা হয় তেমনি। খামারিরা ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে ষাঁড় গরুদের ভিন্ন ভিন্ন নাম দেন। যেমন শাকিব খান, ডিপজল রাজা ও বাদশা। ষাঁড় গরুর নামের তালিকা থেকে বাদ যায়নি বিন লাদেনের নামও। এ যাবত কালে ষাঁড়ের যত জনপ্রিয় নাম রয়েছে তা নিচে দেওয়া হলো।
শাকিব খান
এবারের কোরবানির হাটে বিক্রির জন্য প্রস্তুত ষাঁড় ‘শাকিব খান’। সাত ফুট উচ্চতার ‘শাকিব খানে’র ওজন ৩১ মণ। যার দাম হাঁকা হচ্ছে ১৩ লাখ টাকা। টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার মিরিকপুর গ্রামের কলেজছাত্র জোবায়ের ইসলাম জিসান গড়ে তুলেছেন ছোট্ট একটি খামার। তার খামারে লালন-পালন করা হচ্ছে ফ্রিজিয়াম জাতের ষাঁড় ‘শাকিব খান’কে।
ডিপজল
জিসানের খামারে ‘শাকিব খান’ ছাড়াও প্রায় একই ওজনের আরও একটি ষাঁড় রয়েছে। তার নাম রাখা হয়েছে ‘ডিপজল’। ‘ডিপজল’ দেখতে কালো।
সুলতান
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে ৪২ মণ ওজনের সুলতান (ষাঁড়) এবারের কোরবানির ঈদে বিক্রি করতে চান মালিক রুহুল আমিন। ঘরোয়া পরিবেশে বড় করা এই ষাঁড়ের ওজন বর্তমানে ৪২ মণ।
মানিক-রতন
৩৬ ও ৩৫ মণ ওজনের দুটি গরুর নাম মানিক-রতন। বিশেষ আকর্ষণ হিসাবে কোরবানির হাট কাপাবে তারা। গরু দুটি পালন করে বড় করে তুলেছেন টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গাজুটিয়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হামিদ আলীর অনার্স পড়ুয়া মেয়ে হামিদা আক্তার।
কালো মানিক
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার খামারি জাকির হোসেন সুমন চার বছর ধরে পালন করে আসছেন একটি ষাঁড়। যার বর্তমান ওজন ৩৫ মণ। কালো রঙ বলে ফ্রিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টির নাম রাখা হয়েছে ‘কালো মানিক’।
রাজা ও বাদশা
বিশাল আকারের সুদর্শন দো আঁশলা সিন্ধি জাতের দুটি ষাঁড়। পাবনার ঈশ্বরদীর চরমিকামারি গ্রামের গরু দুটির মালিক রিয়াজুল ফকির বলেছিলেন, “২০১৭ সালের আগস্ট মাসে আমি পাবনার সিটি পশুহাট থেকে গরু দুটি কিনে আনি। তখন গরু দুটি হালকা পাতলা থাকলেও আমরা স্বামী-স্ত্রী গরু দুটিকে সন্তানের মত লালন পালন করেছি। আর আদর করে নাম দিয়েছিলাম রাজা-বাদশা।”
বাংলার বস
যশোরের মনিরামপুরে ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়টির দাম হাঁকা হয়েছিল ৩০ লাখ টাকা ৷ গরুটিতে ৩৭ মণ মাংস আছে বলে দাবি করেছিলেন মালিক আজমত আলি। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ষাঁড়টির নাম দেয় ‘বাংলার বস’৷
বাংলার সম্রাট
‘বাংলার সম্রাট’ নামের আরেকটি ষাঁড় ছিল আজমত আলির কাছে। গরুটির দাম হাঁকা হয়েছিল ২৫ লাখ টাকা। মাংস ছিল ৩৫ মণ।
বিন লাদেন
‘বিন লাদেন’কে কে না চেনেন? আল কায়েদা হিরো হিসেবে আলোচনায় আসা এই মানুষটির জঙ্গি সম্পৃক্ততার গল্প ও ভয়াবহ হামলায় নিহত হওয়ার ঘটনাও বেশ পুরনো। তবে দিনাজপুরের হিলিতে আলোচনায় এসেছিল আরেক ‘বিন লাদেন’। সাদা-কালো বর্ণের ব্রাহমা জাতের বিন লাদেনের (ষাঁড়) উচ্চতা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি, লম্বা ১১ ফুট ৬ ইঞ্চি। ১৫ লাখ টাকা দাম হেঁকেছিলেন দিনাজপুরের হিলির ছাতনি গ্রামের খামারি মাহফুজার রহমান বাবু।
মহারাজ
‘মহারাজ’ নামের ষাঁড়টি পশুকর্মকতাদের পরামর্শে লালন-পালন করা হয়েছিল বলে জানান বেতাগী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ। বরগুনার বেতাগী উপজেলার বটতলা গ্রামের খামারি হাফিজুর রহমান জানান, মহারাজের পেছনে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার টাকা খরচ করা হত।
রাজা
এ রাজা কোনো রাজ্যের নয়। কোরবানির জন্য লালন-পালন করা একটি ষাঁড়ের নাম ‘রাজা’। কালো ও সাদা রঙের সুঠাম স্বাস্থ্যের ষাঁড়টির দৈর্ঘ্য সাড়ে ৭ ফুট, উচ্চতা ৪ ফুট। ওজন ২৫ মণ। ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি দেশীয় পদ্ধতিতে নিজের বাড়িতে মোটাতাজা করেছিলেন নওগাঁর ধামইরহাট পৌরসভার চকময়রাম এলাকার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম।
রাজা মশাই, সাদ্দাম ও গাদ্দাফি
দিনাজপুরের হিলি চারমাথা থেকে ছয় কিলোমিটার পূর্বে ছাতনী গ্রামে আশরাফ ফার্মস। সৌখিন খামারি মাহফুজার রহমান খামারটি গড়ে তুলেন। তিনি তিনটি ষাঁড়ের নাম দিয়েছিলেন রাজা মশাই সাদ্দাম ও গাদ্দাফি।