মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি হচ্ছে স্বার্থপরতা। নিস্বার্থতাও স্বার্থপরতার উল্টো রূপ। মানুষ যখন নিজের প্রতি সবচেয়ে বেশি প্রতিরোধী হয়ে উঠে তখনই স্বার্থপরতা চরিত্রে ফুটে উঠে। সামাজিক সম্পর্ক হোক কিংবা কর্মক্ষেত্রে আপনার স্বার্থপর বৈশিষ্ট্য প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠবে। আপনি যত যোগ্যই হোন না কেন, স্বার্থপরতা সবকিছুই উপেক্ষা করতে পারে। কারণ নিজের জন্য অত্যধিক উদ্বিগ্ন হওয়া বা অন্যদের নির্বিশেষে শুধু নিজের সুবিধাই উপলব্ধি করা স্বার্থপর চরিত্রের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
স্বার্থপর হওয়া তাই মোটেও ভালো কোনো বৈশিষ্ট্য নয়। এটি মানুষকে অসৎ করে দিতে পারে। তাই নিজের মধ্যে স্বার্থপরতার বৈশিষ্ট্য উপলব্ধি করলে এখনই সতর্ক হোন। দৈনন্দিন জীবনে চেষ্টা করুন স্বার্থপরতা থেকে বেরিয়ে আসতে। এর জন্য যা করা যাবে সেই বিষয় নিয়েই কিছু পরামর্শ থাকছে এই আয়োজনে_
কুশল বিনিময় করুন
কারো সঙ্গে দেখা হলে "কেমন আছেন?" কথাটি জিজ্ঞেস না করে বরং তার স্বাস্থ্য, শখ বা আগ্রহের বিষয়ে কথা বলুন। এতে আপনার আন্তরিকতা প্রকাশ পাবে। আত্মীয়-স্বজন ও সহকর্মীর সঙ্গে ইতিবাচক কথোপকথন সম্পর্ক ভালো করে। তবে খেয়াল রাখবেন খুব বেশি ব্যক্তিগত প্রশ্ন করবেন না।
ভালো শ্রোতা হোন
কোনো বিষয়ে কথা বলছেন কিংবা জানতে চাচ্ছেন অস্থির হবেন না। অন্যের উত্তরের জন্য় অপেক্ষা করুন। বিরক্তবোধ বা তাড়াহুড়ো করবেন না। নিজের কথা বলার জন্য অন্যকে থামিয়ে দিবেন না। অন্যের কথাগুলোও শুনুন। কেউ যদি খারাপ অনুভব করে তবে তার সমস্যার কথাগুলো শুনুন। সমস্যা সমাধানের কোনো সুযোগ থাকলে সহযোগিতা করুন।
অন্যের দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করুন
জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে পরতে হয়। আমরা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করি কিংবা অন্যের বিচার করি। এমনটা করবেন না। নিজেকে সেই ব্যক্তির স্থানে রাখুন। সেই মানুষটি কিসের মধ্য দিয়ে গেছে তা উপলব্ধির চেষ্টা করুন। তখনই তারা কেন তাদের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। এতে আপনার সহানুভূতিশীলতা এবং নিঃস্বার্থতা প্রকাশ পাবে।
কৃতজ্ঞতা অনুশীলন করুন
পৃথিবীর সব সুযোগ-সুবিধা সবার নেই। আপনার যা আছে তার জন্য কৃতজ্ঞ হন। নিজের মৌলিক চাহিদা গুলো পূরণ হচ্ছে এর জন্য় কৃতজ্ঞ থাকুন। প্রতিদিন অন্তত তিনটি জিনিসের জন্য কৃতজ্ঞ হোন। এটি অনুশীলন করুন। দেখবেন জীবন কতটা সহজ। নিজের অন্তহীন চাহিদার কোনো প্রয়োজনই তখন হবে না।
অন্যকে উৎসাহিত করুন
নিজের জন্য় নয়, বরং অন্যের জন্য ছোট ছোট কাজ করা শুরু করুন। কোনও বন্ধুকে সাহায্য করতে পারেন। কাজের ক্ষেত্রে বা পারিবারিক সমস্যা তার পাশে থাকুন। তার প্রয়োজন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন। খবর নিন। যথাসম্ভব তার পাশে থেকে তার সমস্যার সমাধান দিন। শুধু বন্ধুদের জন্যই নয়, পরিচিত যেকোনো মানুষ বা সহকর্মী, পরিবারের সদস্যদের দিকেও খেয়াল রাখুন। তাদের ভালো কাজের প্রশংসা করুন এবং তাদের লক্ষ্য অর্জনে অনুপ্রাণিত করুন।