ছোটবেলা থেকেই শিশুদের ভালো অভ্যাসগুলোর আয়ত্ত করতে হয়। শিষ্ঠাচার শেখাতে হয়, ভালো-খারাপের পার্থক্য শেখাতে হয়। সবকিছুই শিশু শিখে বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকে। শিশুরা বড়দের অনুকরণও করে। বড়দের যেমনটা করতে দেখবে তা থেকেই শিখবে। সেই অভ্যাসগুলোই আয়ত্ত করবে। সব অভ্যাসের মধ্যেই একটি হচ্ছে বই পড়া। ছোট বেলা থেকেই শিশুকে বইয়ের গুরুত্ব বুঝিয়ে বই পড়ায় আগ্রহী করে তুলতে পারেন বাবা-মা। শিশুর শরীরের পুষ্টি বৃদ্ধিতে খাবারের যেমন বিকল্প নেই। তেমনই শিশুর মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে বই পড়ার বিকল্প নেই। শিশু যত বই পড়বে ততই জ্ঞানের পরিধি বাড়বে। বলা যায়, ছোট্ট ঘরে বসেই পৃথিবীর নানা তথ্য-চিত্র শিশু জানতে পারবে শুধু বই পড়ার মধ্য দিয়েই। তাই শিশুকে বই পড়ায় উত্সাহ দিন। বই পড়ার গুরুত্ব জানান। শিশুকে বইপড়ার অভ্যাসটি আয়ত্ত করতে আপনিই হতে পারেন একমাত্র সহযোগী।
আপনার সন্তানকে বইপড়ায় আগ্রহী করে তুলতে কিছু বিষয়ে এখনই খেয়াল রাখুন। শুরুটা কীভাবে করবেন সেই বিষয়টি নিয়েই থাকছে আজকের এই আয়োজন।
- সন্তানকে যদি হাতে বই ধরিয়ে দিয়েই বলেন, ‘এটা পড়ো’। আপনার সন্তান তা কখনোই মানবে না। কারণ সে ভাববে এটা আপনার শাস্তির কোনো অংশ। বরং সন্তানকে বই পড়তে দেওয়ার আগে নিজে বইটি পড়ে শোনান। সন্তানকে বইটির সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলুন। এরপর একই ধরণের আরেকটি বই তাকে পড়তে দিন। এতে আপনার সন্তানের আগ্রহ বাড়বে।
- কাজের অবসর সময়ে আপনি বই পড়ছেন। সন্তান যদি এটা ছোটবেলা থেকেই দেখে তবে সেও তাই শিখবে। তাই সন্তানকে বই পড়ানোর অভ্যাস করানোর আগে নিজেও সেই অভ্যাস করুন।
- সন্তানকে শুরুতেই কঠিন কোনো বই পড়তে দিবেন না। মজার কোনো বই দিন। যা পড়ে তারা আনন্দ পাবে। সন্তানের আগ্রহের জায়গাটা বুঝে নিন। সে যদি গোয়েন্দা কাহিনি, বৈজ্ঞানিক বই বা ভৌতিক কোনো কাহিনি অথবা কার্টুন কমিক পড়ে আনন্দ পায় তাই পড়তে দিন। জোর করে কিছু চাপিয়ে দিবেন না।
- সন্তানকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন? তাকে বইয়ের বাতিঘরে নিয়ে যান। যেখানে অনেক বইয়ের সমারোহ। আপনার সন্তান বইয়ের সঙ্গে নিজেকে কানেক্ট করতে পারবে সহজেই।
- শিশুদের মনে অনেক কৌতুহল থাকে। তাকে বিখ্যাত লেখকদের জীবনী পড়ে শোনান। তাদের নাম জানান। বড় হয়েও আপনার সন্তান সেই লেখকদের বই পড়ায় আগ্রহী হবে।
- পাঠ্য বই পড়তে অনেক বাচ্চারই ভীতি থাকে। কিন্তু গল্পের বইয়ে তাদের আগ্রহের সীমা থাকে না। এর কারণ কী জানেন? পাঠ্যবই শিশুদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে তাদের ধারণা হয়। তাদেরকে এই উপলব্ধি থেকে বেরিয়ে আসতে সহযোগিতা করুন। গল্পের বই পড়া শেষে তাদের কাছে বইয়ের শিক্ষণীয় বিষয়টি জানতে চান। গল্পটা তার মুখেই শুনুন। কতটা মনে রাখছে দেখুন। এরপর পাঠ্য বই পড়ার সময়ও তেমনটাই করুন। আপনার সন্তান বিষয়টি উপভোগ করবে এবং পাঠ্যবই পড়ায়ও তার আগ্রহ বাড়বে।