• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১১ অক্টোবর, ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ৭ রবিউস সানি ১৪৪৬

ঘন ঘন লোডশেডিং হলে কী করবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪, ০৭:২৬ পিএম
ঘন ঘন লোডশেডিং হলে কী করবেন
ছবি: সংগৃহীত

ঘন ঘন বিদ্যুত চলে যাওয়া বা লোডশেডিং যেন নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে বিদ্যুতের ঘাটতির কারণেই সাধারণত লোডশেডিং হয়। যা অর্থনীতি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। লোডশেডিং একেবারে এড়ানো না গেলেও সঠিক পরিকল্পনা এবং প্রযুক্তির ব্যবহার করে এর প্রভাব কমানো সম্ভব বলে মত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাছাড়া বিদ্যুৎ ব্যবহারে বেশি দায়িত্বশীল হওয়া অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করা হচ্ছে। এটি ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ ঘাটতির সমস্যা মোকাবিলা করা সহজ করতে পারে। লোডশেডিং বেশি হলে কী করা যেতে পারে চলুন জেনে নেই।

ব্যাটারি বা আইপিএস ব্যবহার করা

লোডশেডিংয়ের সমস্যার অন্যতম কার্যকর সমাধান হলো আইপিএস বা ইউপিএস ব্যবহার করা। এটি এমন এক ধরনের বিদ্যুৎ সংরক্ষণ ব্যবস্থা, যা বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পরেও কিছু সময়ের জন্য সরবরাহ করে। আইপিএস বা ব্যাটারি ইনভার্টার ঘরের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি যেমন পাখা, লাইট ইত্যাদি চালু রাখার জন্য সহায়ক। বাজারে বিভিন্ন ধরনের আইপিএস পাওয়া যায়, যা আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী কিনে নিতে পারেন।

সৌর শক্তি ব্যবহার

স্থায়ী সমাধান হিসেবে সৌর শক্তির ব্যবহার ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের বিরুদ্ধে এটি একটি কার্যকর বিকল্প। সোলার প্যানেল ব্যবহার করে ঘর বা অফিসে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারেন। এটি সেটআপ করে নিলে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হবে। এটি  প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যুত উত্পাদন করে। তাই খরচও অনেক কম।

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতনতা

লোডশেডিংয়ের সমস্যা কমানোর জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করার জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন যন্ত্রপাতি যেমন এসি, ওভেন ইত্যাদির ব্যবহার কমাতে হবে। বিশেষ করে পিক আওয়ারে এসব যন্ত্রের ব্যবহার কমানো উচিত। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাল্ব এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা গেলে চাপ কিছুটা কমানো সম্ভব।

জরুরি আলোর ব্যবস্থা

ঘরে জরুরি আলোর ব্যবস্থা রাখা অত্যন্ত জরুরি। ব্যাটারি চালিত লাইট, টর্চ, কিংবা সৌর চালিত আলো রাখতে পারেন। বিশেষ করে এমন কিছু লাইট বা টর্চ ব্যবহার করতে পারেন যা চার্জেবল। এতে চার্জ করে নিলে দীর্ঘ সময় আলো পাওয়া যায়।

প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির জন্য জেনারেটর

লোডশেডিংয়ের সময় হাসপাতালে বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুত সরবরাহ করতে জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে পারেন। যদিও জেনারেটর চালানোর খরচ একটু বেশি। তবে এটি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নিশ্চয়তা দেয়।

সময় ব্যবস্থাপনা

লোডশেডিং সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময়ে হয়। এই সময়সূচি অনুসরণ করে কাজের পরিকল্পনা করে নিন। গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন পড়াশোনা, অফিসের কাজ, বা যেকোনো বৈদ্যুতিক কাজগুলো আগেই সেরে নিন। লোডশেডিংয়ের সময়ের বাইরে কীভাবে কাজগুলো করা যায় তা পরিকল্পনা করে নিতে পারেন। সময় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে লোডশেডিংয়ের নেতিবাচক প্রভাব এড়ানো যায়।

ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি সুরক্ষা

লোডশেডিংয়ের সময় এবং পরে হঠাৎ বিদ্যুৎ ফিরে আসলে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এজন্য সার্জ প্রোটেক্টর ব্যবহার করা যেতে পারে। যা যন্ত্রপাতিকে অতিরিক্ত ভোল্টেজ থেকে রক্ষা করবে। এছাড়া লোডশেডিং শুরু হওয়ার আগে কম্পিউটার, টেলিভিশন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি বন্ধ করে রাখা উচিত।

বাসার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ

লোডশেডিং হলে ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ঘরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে ঘরের জানালা খোলা রাখুন। যেন বাতাস চলাচল করতে পারে। হালকা সুতির কাপড় পরিধান করুন। আরামদায়ক হবে। দিনের বেলা ঘরের পর্দা টেনে রাখুন। যেন সরাসরি সূর্যের আলো ঘরে প্রবেশ না করে এবং ঘর ঠাণ্ডা থাকে।

খাবার সংরক্ষণ

ফ্রিজে সংরক্ষিত খাবার লোডশেডিংয়ের কারণে নষ্ট হতে পারে। তাই লোডশেডিং হলে ফ্রিজের দরজা বারবার না খোলাই ভালো। কারণ এতে ভেতরের ঠাণ্ডা বাতাস বেরিয়ে যায় এবং খাবার দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

মানসিক প্রস্তুতি

লোডশেডিংকে বাস্তবতা হিসেবে মেনে নেওয়া এবং তার সঙ্গে মানিয়ে চললে অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। তাছাড়া এটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি। লোডশেডিংয়ে হতাশ না হয়ে এই সময়টিকে অন্য কোনো কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন। বই পড়া, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো কিংবা ঘরের অন্যান্য কাজ সেরে নিতে পারেন।

Link copied!