• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৭ মে, ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ৮ জ্বিলকদ ১৪৪৫

আগুন লাগলে প্রথমেই যা করবেন


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৩, ১১:৩০ এএম
আগুন লাগলে প্রথমেই যা করবেন

অফিস, বাসা, কর্মক্ষেত্রে বা আপনি যেখানে অবস্থান করছেন, সেখানে হঠাৎ আগুন লেগে গেল। তখন দেখা যায় আগুন লাগলে তাড়াহুড়োয় আমরা অনেক সময় ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।  তাই আগুন থেকে বাঁচতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সতর্কতা। চলুন জেনে নিই তেমন কিছু বিষয়—

 

  • যে পাঁচ ধরনের আগুন দেখা যায়
  • ছাই হয় এমন আগুন
  • তেল বা রাসায়নিক পদার্থ থেকে আগুন
  • গ্যাস থেকে আগুন
  • বৈদ্যুতিক গোলযোগের আগুন
  • ধাতব পদার্থের আগুন

 

আগুন লাগলে বিচলিত না হয়ে যেসব কাজ করবেন
 

  • যত দ্রুত সম্ভব ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিন। আপনার আশপাশের ফায়ার স্টেশনের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে আগে থেকেই মোবাইলে সেভ করে রাখুন। জরুরি পরিষেবা ৯৯৯-এ কল করুন।
  •  অন্যের কথায় বিচলিত না হয়ে আদৌও আগুন লেগেছে কি না, তা বোঝার চেষ্টা করুণ। আগুন ছোট থাকতেই অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহার করে তা নিভিয়ে ফেলুন।  
  • আগুন লাগলে দামি জিনিসপত্র বাঁচাতে গিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। মনে রাখবেন, সবচেয়ে দামি বস্তুটি হলো আপনার নিজের জীবন। তাই আগে নিরাপদ জায়গায় বাড়ির সবাই সাবধানে বেরিয়ে আসুন।
  •  আগুন যদি বৈদ্যুতিক বা রাসায়নিক দ্রব্য থেকে না লেগে থাকে, তাহলে আপনি সেটা নেভানোর জন্য পানি ব্যবহার করতে পারেন। যে আগুন আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে, তা নেভানোর চেষ্টা করবেন না।
  • আগুন বৃদ্ধি পেয়ে যদি এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে সেটা সহজে নেভানো যাবে না, তাহলে দ্রুত ভবন ত্যাগ করুন। আগুন ছড়িয়ে পড়লে বের হওয়ার সুযোগ না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
  • যদি দেখেন দরজা গরম, দরজার নিচ দিয়ে বা ফাঁকা জায়গা দিয়ে ধোঁয়া আসছে এবং দরজার হাতলও গরম, তাহলে দরজা খুলবেন না। তার মানে বুঝতে হবে, আগুন কাছে চলে এসেছে। যদি দেখেন দরজার হাতল ঠান্ডা, দরজার ফাঁক দিয়ে ধোঁয়া আসছে না, তাহলে ধীরে ধীরে ও সাবধানতার সঙ্গে দরজা খুলুন এবং তাড়াতাড়ি ভবন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করুন।
  • বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুন লাগলে প্রথমেই মূল সুইচ বন্ধ করে দিন।
  • বৈদ্যুতিক সুইচ বোর্ড বা মাল্টিপ্লাগের আশপাশে কাগজপত্র বা বাক্স-প্যাটরা রাখার সময় সাবধান থাকুন। টিভি, ফ্রিজ, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, মোবাইল ফোন চার্জার ইত্যাদি বৈদ্যুতিক প্লাগে লাগিয়ে রেখে দেবেন না। কাজ শেষ হলে সুইচ বন্ধ করে প্লাগ থেকে খুলে রাখুন।
  • যদি আপনার পরনের কাপড়ে আগুন ধরে যায়, তাহলে ভুলেও দৌড়াবেন না। এতে আগুন আরও তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়তে পারে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাটিতে শুয়ে পড়ুন, দুই হাত দিয়ে আপনার মুখ ঢেকে সামনে পেছনে গড়াগড়ি করতে থাকুন যতক্ষণ পর্যন্ত আগুন নিভে না যায়।
  • ধোঁয়ার মধ্যে মুখ না ঢেকে বের হতে যাবেন না। এমনকি হেঁটেও বের হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যদি সারা বাড়ি ঘন কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়, তাহলে নিচু হয়ে হামাগুড়ি দিয়ে অথবা গড়াতে গড়াতে বের হতে হবে। মুখ সম্পূর্ণ ঢেকে ধোঁয়ার নিচ দিয়ে বের হয়ে আসুন। নইলে ধোঁয়ায় যে বিষাক্ত গ্যাস থাকে, তা মুখ-চোখে ঢুকে গেলে বিপদ আরও বাড়বে।
  • যদি আপনার ভবন ধোঁয়ায় ভরে যায়, তাহলে বের হওয়ার সময় নাক-মুখে একটা কাপড় চেপে ধরুন এবং যতটা সম্ভব নিচু হয়ে আস্তে আস্তে বের হয়ে আসুন। ধোঁয়ার মধ্যে নিশ্বাস নেয়া খুবই বিপজ্জজনক। এতে আপনার শ্বাসনালি পুড়ে যেতে পারে।
  • যদি ভবনের মধ্যে ধোঁয়া বাড়তে থাকে, তাহলে হাত-পায়ে ভর দিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে ভবন থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
  •  আপনি যদি ঘরের মধ্যে বন্দি হয়ে পড়েন, তাহলে ডাস্ট টেপ, ভেজা তোয়ালে বা কাপড় দিয়ে দরজা ও তার আশপাশের সব ফাঁকা জায়গা ও বাতাস চলাচলের পথ বন্ধ করে দিন।
  • জানালার বাইরে উজ্জ্বল রঙের কাপড় ঝুলিয়ে দিন এবং নাড়াচাড়া করতে থাকুন যাতে অগ্নিনির্বাপণ কর্মীরা বুঝতে পারেন আপনি ভেতরে আছেন।
  • আগুন যদি আপনার রান্নাঘরের তেল বা গ্রিজ থেকে সৃষ্টি হয়, তাহলে তার ওপর বেকিং সোডা বা লবণ ঢেলে দেয়ার চেষ্টা করুন। এটা যদি রান্না করার পাত্রে সূত্রপাত হয়, তাহলে তা ঢাকনা দিয়ে দ্রুত ঢেকে দিন। জ্বলতে থাকা কড়াইয়ে পানি ঢালবেন না বা ফায়ার এক্সটিংগুইশার ব্যবহার করবেন না।
  • কোনোভাবেই আগুন না নেভা পর্যন্ত বাড়ির ভেতর আবার ঢোকার চেষ্টা করবেন না।
  • সামান্য আহত হলেও চিকিৎসা নিতে অবহেলা করবেন না। তাই আহত হয়ে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • হঠাৎ আগুন লাগলে কী করবেন তার পূর্বপ্রস্তুতি থাকতে হবে। দরজা, জানালা, সিঁড়ির অবস্থান ও দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার বিকল্প কোনো রাস্তা আগে থেকেই নির্দিষ্ট করে রাখতে হবে। বাড়ির সবাইকে, অফিসের সহকর্মীদের এ বিষয়ে জানিয়ে রাখুন।
Link copied!