প্রতিবছর নভেম্বর মাসে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার ধুম পড়ে। সারাবছরের আয় থেকে সরকারকে কর দেওয়ার প্রক্রিয়াই হলো আয়কর রিটার্ন। জুন-জুলাই পর্যন্ত হিসাব নিকাশ কষে সরকারকে কর দিতে হয়। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বর বা টিআইএন থাকলেই আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক।
অনেকের ধারণা, রিটার্ন দাখিল করলেই আয়কর দিতে হবে। এটা ঠিক নয়। যদি করযোগ্য আয় না থাকে তবে কর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে রিটার্ন জমা অবশ্যই দিতে হবে।
প্রতি অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত জরিমানা ছাড়া বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেই অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বর আয়কর দিবস পালিত হয়। এরমধ্যেই রিটার্ন দাখিল করতে হয়। আয়কর অফিসে, আয়কর মেলায় কিংবা অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যায়। সুবিধা অনুযায়ী আপনিও আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন সহজেই।
আয়কর অফিস কিংবা মেলায় গিয়ে লাইনে দাড়িয়ে রিটার্ন জমা দেওয়া বেশ ঝক্কি ঝামেলার কাজ। তাই অনলাইনে রিটার্ন দাখিল করা হতে পারে সেরা উপায়। অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন। কীভাবে সব প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে তা বুঝে উঠতে পারেন না। যারা এই বছর অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে চা্চ্ছেন তাদের জন্য কিছু পরামর্শ থাকছে এই আয়োজনে।

- অনলাইনে আয়কর রিটার্ন সনদ, আয়কর রিটার্নের কপি নেওয়া যাবে। এমনকি রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানোর আবেদন করারও সুযোগ রয়েছে। এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে etaxnbr.gov.bd লিঙ্ক বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে।
- ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে ই-রিটার্ন অপশন সিলেক্ট করতে হবে। এখানে থাকা ‘গাইডলাইন’ অপশনে ক্লিক করে তথ্য জেনে নিন।
- অ্যাকাউন্ট করা থাকলে তা লগ ইন করুন। যারা এবারই প্রথম রিটার্ন দিচ্ছেন তারা রেজিস্ট্রেশন অপশনে ক্লিক করে অ্যাকাউন্ট করে নিন।
- টিন নম্বর, মোবাইল নম্বর ও একটি ক্যাপচা থাকবে। এগুলো সঠিকভাবে পূরণ করে ভেরিফাই অপশনে ক্লিক করুন।
- ফোন নম্বরে ওটিপি কোড যাবে। কোডটি দিয়ে নতুন পাসওয়ার্ড সেট করুন। নতুন পাসওয়ার্ডটি আবারও দিন। এরপর সাবমিট করুন।
- লগইন করলেই আপনার নাম ঠিকানাসহ বিভিন্ন তথ্য পূরণের জন্য অপশন আসবে। এগুলো পূরণ করে সেভ অ্যান্ড কন্টিনিউ দিন। অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে যাবে। টিআইএন এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে যে কোনও স্থান থেকেই অ্যাকাউন্ট সাইন ইন করা যাবে।
- সাইন-ইন করে বামে উপরে থাকা রিটার্ন সাবমিশন অপশনে যান। সেখানে ফরম রয়েছে। সব তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করে নিন।
- ইনকাম সোর্সগুলো সঠিকভাবে বাছাই করতে হবে। এরপর ট্যাক্স অ্যান্ড পেমেন্ট নামের একটি পেজ পাওয়া যাবে। সেখানে আপনাকে কত টাকা ট্যাক্স দিতে হবে সেটিও দেখানো হবে।

- ‘জিরো ট্যাক্স’ রিটার্ন জমা দিতে প্রসিট টু অনলাইন রিটার্ন অপশনে ক্লিক করুন। রিটার্ন ফ্রম থেকে ভালোভাবে তথ্য যাচাই করার সুযোগ পাবেন। এরপর সাবমিশন রিটার্ন অপশনে ক্লিক করে দিন। সেখানে ইয়েস ক্লিক করলেই আপনার রিটার্ন সাবমিট হয়ে যাবে। এরপর একটি রেফারেন্স নম্বর দেওয়া হবে।
- ট্যাক্স দিতে হলে পে নাও অপশনে গিয়ে তথ্য জানুন। ট্যাক্সের টাকা পরিশোধের বিভিন্ন অপশন পাওয়া যাবে এখানে। সেখানেই পেমেন্ট করা যাবে।
- রিটার্ন ও ট্যাক্স জমা দেওয়া হয়ে গেলে স্লিপ ও সার্টিফিকেট ডাউনলোড করুন। হোম পেজের উপরে সার্টিফিকেট, রিটার্ন ফরমসহ সব অপশন পাওয়া যাবে।