কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকরের চিরপ্রস্থানে এক গৌরবময় অধ্যায়ের সমাপ্তি হল ভারতীয় সংগীতের। জনপ্রিয় এই শিল্পী তাঁর কণ্ঠে সবাইকে মাতিয়ে রাখলেও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন সঙ্গীহীন।
৯২ বছরের পথ পরিক্রমায় তিনি ছিলেন চিরকুমারী। সংগীত জীবনে এত সাফল্যের পরও লতা মঙ্গেশকরের একা থাকার কী কারণ? এ প্রশ্ন ও কৌতুহল তার ভক্ত-অনুরাগীদেরই।
কথিত আছে, জীবনে কোন একসময় একজনকে ভালোবাসতেন লতা মঙ্গেশকর। তবে তার সেই ভালোবাসা পূর্ণতা পায়নি। আর প্রেমে সফল হননি বলেই কারও সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধা হয়নি তার।
বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রাজস্থানের (তৎকালীন রাজপুতনা) দুঙ্গরপুরের রাজ ঘরানার মহারাজ রাজ সিং-এর প্রেমে পড়েছিলেন লতা। যিনি সম্পর্কে লতার বড়ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন।
জীবনে প্রেম এসেছিল, তবে শেষ পর্যন্ত তা পূর্ণতা পায়নি। রাজ ঘরানার ছেলে রাজ সিং বাবা-মায়ের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, কোনো সাধারণ ঘরের মেয়েকে তিনি রাজবংশের বউ করে আনবেন না।
সেই প্রতিজ্ঞা বজায় রেখেছিলেন রাজ সিং। তাই তিনিও কোনদিন বিয়ে করেন নি।
তবে বিভিন্ন সময়ে লতার ভাষ্য ছিল, সংসারের দায়িত্ব কাঁধে থাকার কারণেই তিনি নিজেকে নিয়ে কোনোদিন আলাদা করে ভাবার সুযোগ পাননি।
লতা-আশা ভোঁসলের বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর মাত্র ৪২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। এরপরই সংসারের ওপর ঘোষ অন্ধকার নেমে আসতে থাকে।
কে ধরবে সংসারের হাল? এ চিন্তায় লতার মা সুধামতী দিশেহারা। শেষ পর্যন্ত দায়িত্বটা এসে পড়লো ১২ বছরের মেয়ে লতার কাঁধে।
বাবার মৃত্যুর মাত্র সাতদিন পরই শোক লুকিয়ে লতা গেলেন ‘প্যাহলি মঙ্গলাগাঁও’ ছবির শুটিংয়ে। মারাঠি এ ছবিটিতে অভিনয় করে আর গান গেয়ে ক্যারিয়ার শুরুর করেন কিংবদন্তি এ শিল্পী। একাই চালিয়ে যান জীবনসংগ্রাম।