জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার পরে প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হলেও ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের আগেই সেশনজটের আশঙ্কা করছেন ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, গত বছরের ২২ নভেম্বর জাবির সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়। পরে ২৬ নভেম্বর থেকে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হলেও ভর্তি কার্যক্রম শেষ করতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। তবে কয়েকটি বিভাগের নির্ধারিত আসন খালি থাকায় ভর্তি কার্যক্রম দীর্ঘ সময় চলছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে জাবির ভর্তি পরীক্ষা করোনাভাইরাসের কারণে এক বছর দেরিতে অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাস শুরু হতে দেরি হওয়ায় সেশনজটের আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগ দীর্ঘমেয়াদি জটে পড়েছে। এ রকম চলতে থাকলে সেশনজট দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের ব্যাচের অনেক শিক্ষার্থী অন্যান্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু করে দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে মিডটার্ম শুরু হবে। সেখানে জাবিতে আমরা এখনো ক্লাস শুরুর তারিখ জানতে পারলাম না। করোনার কারণে প্রায় এক বছর দেরিতে ভর্তি হয়েছি। এরপর ক্লাস শুরু হতে দেরি হওয়া। আমরা হতাশায় আছি। দ্রুত ক্লাস শুরু হলে ভালো হয়।”
ভর্তি প্রক্রিয়া এত দেরিতে শেষ হওয়ার কারণ জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সচিব ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) মো. আবু হাসান সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অনুষদের আসন শূন্য থাকায় ডিনদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ভর্তি কর্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। তবে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে।”
তিনি আরও বলেন, “৩ মার্চ ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হবে। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হবে।”
এদিকে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া তিন মাসের মধ্যে শুরু হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে দুটি ব্যাচ একসঙ্গে প্রথম বর্ষে রাখা সম্ভব কি না, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকে।
সেশনজট বিষয়ে জানতে চাইলে প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আলম বলেন, “আমরা এবার শীতকালীন ছুটি বাতিল করেছিলাম। সেশনজট কমানোর জন্য প্রয়োজনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি কমিয়ে আনা হবে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আমাদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন ক্লাসে সময় কিছুটা বাড়ানোর জন্য। সেশনজট কমানোর জন্য আমরা কয়েক দিন আগে মিটিং করে একটি কমিটি গঠন করেছি। কমিটি প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরুর আগে একটি সময়সূচি প্রনয়ন করবেন। সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষাসহ সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে।”