শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের চড়াও হওয়ার ঘটনাকে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাতে রাজধানীর হেয়ার রোডে মন্ত্রীর বাসায় শাবি শিক্ষকদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “শাবিতে পুলিশি আচরণ (অ্যাকশন) দুঃখজনক। কিন্তু শিক্ষকদেরও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। দুটোই অনভিপ্রেত। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা অনশন থেকে সরে এসে আলোচনায় বসুক। তারা চাইলে অনশনরত অবস্থাতেও আলোচনায় বসতে পারেন। আলোচনাই একমাত্র সমস্যা সমাধানের উপায়।”
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে শিক্ষামন্ত্রীর হেয়ার রোডের বাসায় এই বৈঠক শুরু হয়।
এ সময় বৈঠকে শাবিপ্রবির পাঁচজন শিক্ষক উপস্থিত হন। এছাড়া বৈঠকে ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি তুলসী সাহার নেতৃত্বে পাঁচজন শিক্ষক ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও শাবিপ্রবির প্রতিনিধি দলের মধ্যে ছিলেন : বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি তুলসী কুমার দাস, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুহিবুল আলম, ফিজিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন মো. রাশেদ তালুকদার, অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সেস অনুষদের ডিন আরিফুল ইসলাম এবং ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন খায়রুল ইসলাম।
এর আগে এই প্রতিনিধি দল শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) রাতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় আসেন।
এদিকে শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বিকালে শিক্ষামন্ত্রী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন। তিনি আলোচনার জন্য শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলকে ঢাকায় আসতে বলেন। মন্ত্রীর সেই প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে রাজি হয়ে ৫ জনের প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পরে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ভার্চুয়াল বৈঠক অথবা শিক্ষামন্ত্রীকে ক্যাম্পাসে আসার অনুরোধ জানায় তারা।
এর আগে গত বুধবার বিকেল ৩টা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে নামেন শাবিপ্রবির ২৪ শিক্ষার্থী। তবে বাবার অসুস্থতার কারণে একজন বাসায় চলে গেছেন। এর আগে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী হলের প্রভোস্ট প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের ছাত্রীরা। পরে দাবি মেনে নেওয়া হবে বলে দেওয়া উপাচার্যের আশ্বাসে হলে ফেরেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, উপাচার্য তাদের দাবি না মেনে সময়ক্ষেপণের চেষ্টা করেন। পরে সেই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনাও ঘটে। একপর্যায়ে পুলিশ গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে আহত হন শিক্ষার্থীরা। যদিও পুলিশ ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
পরে উপাচার্যকে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশনে নামেন শিক্ষার্থীরা।