ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (৫ ডিসেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু হলের সামনে থাকা অস্থায়ী ক্যাম্পের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। ইতোমধ্যেই অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী ছাত্রী ক্যাম্পাসের পাশে শেখপাড়া এলাকায় একটি মেসে থাকেন। ফলে বঙ্গবন্ধু হল পকেট গেট দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করতে হয়। পকেটগেটের পাশে পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। প্রতিদিনের মত রোববারও ক্যাম্পাসে আসছিলেন ওই ছাত্রী। এসময় ক্যাম্পের সামনে নিরাপত্তা পোশাকধারী এক ব্যক্তি তার দিকে তাকিয়ে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ কথা বলতে থাকেন।
একপর্যায়ে ভুক্তভোগী চিৎকার শুরু করলে পুলিশ সদস্য ক্যাম্পের ভিতরে চলে যায়। এর আগেও তিনি ওই এলাকায় ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। একইসঙ্গে অভিযুক্তের বিচার দাবি করেছেন অভিযোগ পত্রে।
দুপুর একটার দিকে ভুক্তভোগী, অভিযুক্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রধান কর্মকর্তা রোজদার আলী রূপম ও পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দীনকে নিয়ে বসেন প্রক্টরিয়াল বডি। এসময় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমি প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করায় প্রক্টর স্যার আমাকে তার অফিসে ডাকেন। সেখানে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য বিষয়টি স্বীকার করেন এবং আমার কাছে ক্ষমা চান। অন্য মেয়েদের সঙ্গে যেন একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় এই শর্তে আমি ক্ষমা করেছি।”
পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দীন বলেন, “পুলিশ সদস্য ও ওই ছাত্রীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। ঘটনার পরে প্রক্টর স্যার আমাকে ও সেই পুলিশ সদস্যকে ডেকেছিলেন। আমরা প্রক্টর অফিসে গিয়েছিলাম। সেখান অভিযোগকারী ছাত্রীও ছিল। আসলে সেই পুলিশ সদস্য ফোনে তার বউয়ের সঙ্গে সাংসারিক ঝামেলা নিয়ে কথা বলছিলেন। ওই ছাত্রী হয়তো ভেবেছিল তার দিকে ইঙ্গিত করে কথা বলেছে, তাই সে খারাপভাবে নিয়েছে। আমাদের দায়িত্বই হলো নিরাপত্তা দেওয়া, আমরা কেন ইভটিজিং করব?”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “আমরা অভিযুক্তকে শনাক্ত করেছি। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ভুক্তভোগীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে বঙ্গবন্ধু হল পুলিশ ক্যাম্পের অফিসার ইনচার্জকে নিয়ে আগামীকাল (সোমবার) আবার বসব।”