অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন এই তিন দফা দাবিতে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষকরা। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে এই কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে এই কর্মবিরতি। এসময় দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচিও পালন করেন শিক্ষক নেতারা। দাবি আদায় না হলে আগামী ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি ৩০ জুন পূর্ণদিবস ও ১ জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতি।
অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীররের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম, ড. এস. এম. সাইফুল ইসলাম, ড. মো. আশরাফ উদ্দিন, জহীর উদ্দিন আহমদ, ড. মোহাম্মদ ফারুক উদ্দিন, হিমাদ্রী শেখর রায়, ড. দীপেন দেবনাথ, ড. মো. নিজাম উদ্দিন, সহযোগী ড. সুব্রত সরকার, ড. শাহজাহান মিয়া,আফজাল হোসেন, মনিপাল প্রমুখ।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষকরা বলেন, “শিক্ষকদের আত্মমর্যাদা এবং গৌরব রক্ষায় গত মে ২০২৪ থেকে গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন, কালোব্যাজ ধারণ, অবস্থান কর্মসূচিসহ নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, অদ্যাবধি যথাযথ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আমাদের অবস্থান করার কথা ছিল ক্লাসে, ল্যাবে, গবেষণায় কিন্তু আজ আমাদের অবস্থান করতে হচ্ছে রাস্তায়, এটা একটা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য লজ্জা। একটা দেশে দুই নীতি চলতে পারে না। প্রত্যয় নাম দিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে যেভাবে অবজ্ঞা আর অবহেলা করা হচ্ছে তাতে দেশ মেধাশূন্য হবে। ডিপার্টমেন্টের ভালো ভালো মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে আমরা ধরে রাখতে পারছি না, গ্র্যাজুয়েট শেষ করে তারা দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার একটাই কারণ শিক্ষা ব্যবস্থায় অবমূল্যায়ন।”
শিক্ষকরা আরও বলেন, “আমরা ৩০ জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করব, এ সময়ের মধ্যে সরকার আমাদের তিন দফা দাবি মেনে না নিলে আগামী পয়লা জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করব এবং যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হবে ততদিন পর্যন্ত ক্লাস, পরীক্ষা, অফিস সবকিছু বর্জন করা হবে।”
আগামী দিনগুলোতে সর্বাত্মক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে শিক্ষকদের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “এই আন্দোলন থেকে কোনোভাবেই পিছপা হওয়া যাবে না এজন্য আমাদের মানসিক প্রস্তুতি দরকার।”
আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, “একটা স্মার্ট আধুনিক ও সভ্য জাতি তৈরির প্রোডাকশন হাউস হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সঙ্গে যদি রাষ্ট্র বৈষম্যমূলক আচরণ করে, তাহলে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই পয়লা জুলাই থেকে সর্বাত্মক আন্দোলনে যাওয়ার আগেই দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান করছি।”
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবীর বলেন, “আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে চাই। আমাদের দাবি মেনে নিয়ে ক্লাসে ফেরার সুযোগ দিন। শিক্ষকরা তাদের মর্যাদা লড়াইয়ে আজ রাস্তায় নেমেছেন। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করেই যাব। তাই আমাদের দাবি মেনে নিয়ে দেশের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ক্লাসে ফেরার সুযোগ দিন।”
 
                
              
 
																 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    



































