সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিসহ কয়েক দফা দাবি বাস্তবায়নে গলায় মুলা ঝুলিয়ে প্রতিবাদ করেছে চাকরিতে ৩৫ প্রত্যাশীরা।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার প্রতিবাদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে ওই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশীদের অভিযোগ, নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ এর পাতা ৩৩ এবং শিক্ষা দক্ষতা ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অনুচ্ছেদে বলা আছে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সেই সঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রপতি, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফসহ অনেকে এই দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করলেও তা পূরণ হয়নি। এছাড়া করোনা মহামারির সময় বয়স ছাড় দিলেও যাদের বয়স প্রায় ৩০ বছর পর্যন্ত ছিল তারা এই ব্যাক ডেটের কারণে ৩৩ বছর পর্যন্ত সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু যাদের ২৭-২৮ বছর তারা কোনো সুযোগই পায়নি।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, “বিশ্বের ১৬২টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে তা উন্মুক্ত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশেগুলোর মধ্যে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে বিভিন্ন রাজ্য ভেদে চাকরিতে আবেদনের বয়স সীমা ৩৫-৪৫ বছর, মালদ্বীপে ৪৫ বছর, শ্রীলঙ্কায় ৩৫ বছর, নেপালে ৩৫ বছর, আফগানিস্তানে ৩৫ বছর। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শুধু বাংলাদেশে এবং পাকিস্তানেই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর। প্রায় ১০ বছর ধরে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩৫ বছরে উন্নীতকরণের দাবি জানিয়ে আসছে। নির্বাচনী ইশতেহারে থাকলেও তার কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১১ সালে সরকারি চাকরি হতে অবসরের বয়স ২ বছর বৃদ্ধি করে ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হলেও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি এবং চাকরি শেষে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ স্বাভাবিক চাকরি প্রক্রিয়া ক্ষেত্রে অন্তরায়।”
তারা আরও বলেন, “বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশনে (বিসিএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর হলেও জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে (বিজেএস) আবেদনের বয়সসীমা ৩২ বছর, সরকারি নার্সিংয়ে ৩৫ বছর এবং বেসরকারি স্কুল-কলেজে ৩৫ বছর। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো তাদের চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা সরকারি মানদণ্ড অনুযায়ী ৩০ বছরকেই অনুসরণ করে। বাংলাদেশের জাতীয় যুব নীতিতে ১৮-৩৫ বছর বয়সীদের যুবক বলা হলেও ৩০ বছর হলেই তাদের চাকরিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। দেশে সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আজ থেকে ৩২ বছর আগে ১৯৯১ সালে ২৭ বছর থেকে ৩০ বছরে উন্নীতকরণ করা হয়। যখন বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল মাত্র ৫৭ বছর। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়ে ৭৩ বছর হলেও চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হয়নি। স্মার্ট বাংলাদেশের কারিগর আমরা, আমরা বাঁচতে চাই, মরতে চাই না। আমরা সম্মানের সহিত বাঁচতে চাই। তাই অবিলম্বে আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া হোক।”
তাদের দাবিগুলো হলো, চাকরির আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর, অবসরের বয়সসীমা বৃদ্ধি, চাকরিতে আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বঙ্গবন্ধুর নামে ল’ কমপ্লেক্স (বঙ্গবন্ধু চেয়ার এবং একটি ম্যুরাল) স্থাপন।