• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দুই পক্ষের সংঘর্ষে পণ্ড বিএনপির সমাবেশ


পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৭, ২০২১, ০৮:১৮ পিএম
দুই পক্ষের সংঘর্ষে পণ্ড বিএনপির সমাবেশ

বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পাবনা জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে যুবদলের এক নেতা ছুরিকাহতসহ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের পর সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। 

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) বিকেলে  পাবনা শহরের গোপাল লাহিড়ীপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহত যুবদল নেতার নাম মনির হোসেন। তিনি জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। 

আহত মনির হোসেনকে প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে পূর্ব নির্ধারিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ শুরু হয় দুপুর ২টার দিকে। জেলা বিএনপির আহবায়ক হাবিবুর রহমান হাবিবের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সাংবাদিক শওকত মাহমুদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ। প্রধান বক্তা ছিলেন রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু।

বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, ওবায়দুর রহমান চন্দন, খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ সভাপতি গোলাম রাব্বানী, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি মামুনুর রশিদ খান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শওকত মাহমুদ বলেন, “চূড়ান্ত আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন হবে। পাবনা থেকেই দেশ আন্দোলন শুরু হবে। আগামীতে চূড়ান্ত আন্দোলন হবে ঐক্যবদ্ধভাবে।”

এ সময় রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু তার বক্তব্যে বলেন, “আওয়ামী লীগের দিন শেষ হয়ে গেছে, পালানোর পথ নাই। আগামী ৩০ তারিখের মধ্যে যদি খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনের মধ্যে সরকারকে পতন করা হবে।“

বিএনপি নেতা শিমুল বিশ্বাস বলেন, “আওয়ামী লীগের পতন শুরু হয়ে গেছে। তারা বাংলাদেশের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। আমাদের জ্ঞানহীন জাতিতে পরিণত করেছে। অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে।”

যুগ্ম মহাসচিব হারুনুর রশিদ বলেন, “নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হয়েছে বলে চতুর্থ ধাপে পাবনা সদরে ইউনিয়নের সবগুলোতে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। পুলিশ দিয়ে সরকারের পতন ঠেকাতে পারবেন না। পুলিশ ভাইদের বলছি আপনারা নিরপেক্ষ থাকবেন।”

সমাবেশে শেষের দিকে বিকেল পৌনে ৫টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে হঠাৎ করেই সংঘর্ষে জড়ায় স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষ। যুগ্মমহাসচিব হারুন উর রশীদ হারুনের বক্তব্য চলাকালে যুবদল নেতা তসলিম হাসান সুইট ও মনির আহমেদের গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির শুরু হয়। এক পর্যায়ে মনিরকে ছুরিকাঘাত করলে সমাবেশস্থল সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় মনিরকে গুরুতর আহত অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সংঘর্ষে সমাবেশ পণ্ড হয়ে গেলে নেতাকর্মীরা বিশৃঙ্খল অবস্থায় ছোটাছুটি করতে থাকেন। এ সময় পুলিশ এসে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। পুলিশ পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিলে দ্রুত নিজেদের বলয়ের নেতাকর্মীদের ব্যারিকেডে সমাবেশস্থল ত্যাগ করে বিএনপির শীর্ষ নেতারা।

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক বলেন, “মনিরের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। তাকে আমরা প্রথমে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি, সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানাতে পারবো।”

এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, সমাবেশে চেয়ারে বসা নিয়ে সুইট ও মনির গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি ও পরে মনিরকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের পুলিশি পাহারায় ঘটনাস্থল থেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি।”

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!