• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

গ্রেপ্তার ১০ জন জেএমবি মতাদর্শী জঙ্গী : র‌্যাব


খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০২২, ০৬:০১ পিএম
গ্রেপ্তার ১০ জন জেএমবি মতাদর্শী জঙ্গী : র‌্যাব

খুলনা নগরীর খা‌লিশপুর থে‌কে গ্রেপ্তার ১০ জন‌ জেএমবি মতাদর্শী নতুন জঙ্গি সংঠনের আমির ও সদস্য ব‌লে দা‌বি করে‌ছে র‌্যাব। এর আগে খালিশপুর বিআইডিসি রোডের কাশিপুর এলাকার আলম শেখের মালিকানাধীন বাড়ির তিনতলা ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে শুক্রবার রা‌তে তাদের আটক করা হয়। অভিযান শেষে তাদেরকে র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো।

শনিবার (১৯ মার্চ) দুপুরে র‌্যাব এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানিয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আনোয়ার কবির মিলন ওরফে মিদ্দাত হোসেন (৫০), সোহেল রানা (৩০), আমিনুল (৩৮), কামরুল ইসলাম (৫৫), রিফাত রহমান (২৪), আব্দুর রউফ (৬২), মো. শেখ ফরিদ (২৭), আব্দুল আলীম (৫০), মো. রফিকুল ইসলাম (৪৬) ও তালহা ইসলাম (১৯)।

সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৬ এর পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ মোশতাক আহমদ বলেন, “নগরীর খালিশপুরের কাশিপুর এলাকার আলম শেখের বাসভবনের তৃতীয় তলায় ‘মাদানী নিসাব খালিশপুর বয়স্ক মাদ্রাসা ও মসজিদে’ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি মতাদর্শীর নতুন সংগঠন ‘জামআতুল মুসলেমিন’ এর একটি গোপন বৈঠক চলছিলো। শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাত ১টায় র‌্যাবের অভিযানিক দল ওই ভবনে অভিযান চালিয়ে ১০ জন জঙ্গী সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই ও নথিপত্র উদ্ধার করা হয়।”

র‌্যাব জানায়, সংগঠনটির স্বঘোষিত আমির আনোয়ার কবির মিলন ওরফে মিদ্দাত হোসেন ২০০২ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে লেখাপড়া করেন। লেখাপড়া শেষ করে বাংলাদেশে ফিরে আসলে তার সঙ্গে ভোলা-চরফ্যাশন এলাকার প্রফেসর মজিদের পরিচয় হয়। এছাড়া প্রফেসর মজিদ তৎকালীন জেএমবির আমির শায়খ আব্দুর রহমান এবং শায়খ সাইদুর রহমানের অনুসারী ছিল। জেএমবির সদস্য প্রফেসর মজিদ ৬৩টি জেলায় বোমা হামলার ঘটনায় জড়িত ছিল এবং পরবর্তীতে মামলার জন্য সে কারাগারে ছিল। জেলে থাকাকালীন প্রফেসর মজিদ জেএমবির নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রাখত। মিদ্দাত হোসেন সৌদি আরব থেকে ফেরার পর থেকেই মজিদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হয়ে ওঠে এবং পরবর্তীতে মজিদের কাছে জেএমবির বায়াত গ্রহণ করে। সে সময়ে মিদ্দাত হোসেন এর সাথে জেএমবির অনেক সদস্যের পরিচয় ঘটে। সন্দেহভাজন জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য ২০১২ সালে ডিবি পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়। এরপর থেকে মিদ্দাত হোসেন একটি নিজস্ব সংগঠন তৈরি করার ব্যাপারে পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, ২০১৮ সাল হতে প্রফেসর মজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত বেশ কিছু ব্যক্তি মিদ্দাত হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে নতুন সংগঠন গঠন করা এবং লোক সংগ্রহের জন্য একতাবদ্ধ হয়। এ প্রেক্ষিতে তারা দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া শুরু করে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল দাওয়াত দেওয়ার মাধ্যমে জনগণের একটি বড় অংশকে নিজেদের দলে ভেড়ানো এবং পরবর্তীতে সশস্ত্র জিহাদের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে সরিয়ে ইসলামিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা।”

এছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা র‌্যাবকে জানায়, মিদ্দাত হোসেন ও তার সহযোগীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সূরা সদস্য নিয়োগের মাধ্যমে প্রতিটি এলাকা থেকে সাথী সদস্য গ্রহণের জন্য কাজ করে যাচ্ছিল। বর্তমানে টাঙ্গাইল, গাজীপুর, যশোর, খুলনা, ময়মনসিংহ এবং ঢাকা এলাকাতে রিক্রুটমেন্ট কার্যক্রম ব্যাপক আকারে চলছে। পরবর্তীতে নিকট ভবিষ্যতে কুষ্টিয়া, রাজশাহী, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ এলাকাতে রিক্রুটমেন্ট এর পরিকল্পনা ছিল এবং অদূর ভবিষ্যতে তারা দেশব্যাপী রিক্রুটমেন্ট করার জন্য সবাইকে অনুপ্রেরণা দিচ্ছিল। এ প্রেক্ষিতে এবারের তিনদিনের প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয় যেখানে মূল লক্ষ্য ছিল নেতৃত্ব এবং সারা দেশে কিভাবে কার্যক্রম চলবে সেটি ব্যাখ্যা করা। প্রোগ্রামকে সফল এবং পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে নির্দেশনা গ্রহণের জন্য অন্যান্য সূরা সদস্যগণ তাদের কর্মীদেরকে নিয়ে প্রোগ্রামে যোগদান করে।

আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

Link copied!